পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই বন্ধন ছিন্ন করার জন্য তিনি অস্থির হয়ে উঠেছেন। তরুণ বয়সের সঙ্গিনী, প্রেরণাদাত্রী নতুন বউঠান কাদম্বরী দেবী তার জীবনে প্রথম নারীর ভলোবাসার আস্বাদ এনে দিয়েছিলেন কিন্তু সেই ভালোবাসাই যখন তার রুচির দাসত্ব করতে রবীন্দ্রনাথকে বাধ্য করতে চেয়েছে, সেই ভালোবাসাই যখন রাহুর প্রেম’-এর মতো সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে, তখন তার মন বিদ্রোহ করেছে। এইভাবে রাণুও যখন তাকে একান্তভাবে নিজের করে চাইতে শুরু করলেন, রবীন্দ্রনাথ তখন চিঠির পর চিঠিতে তাকে সতর্ক করে দিয়েছেন, লিখেছেন (২৫ জুলাই), আমি ভিতরের সৌন্দর্যাকে সব চেয়ে ভালবাসি— যাদের স্নেহ করি তাদের মধ্যে সেই সৌন্দর্য্যটি দেখবার জন্যে আমার সমত্ত মনের তৃষ্ণা। মেয়েদের মনে এই সৌন্দৰ্য্যটি যখন দেখা যায় তখন তার আর তুলনা কোথাও থাকে না। কিন্তু মেয়েরা যখন কেবল সংসারে জড়িয়ে থাকে, সব তাতেই কেবল আমার আমার করে, নিজের ছোট ছোট সুখ দুঃখকে নিয়ে পৃথিবীর সব মহৎ লক্ষ্যকে আড়াল করে রাখে, যখন তারা বড় চেষ্টার বাধা, বড় তপস্যার বিঘ্ন হয়ে কেবল মাত্র লোকের মন ভোলানোকেই নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বলে মনে রাখে তখন বাইরে তাদের যতই সৌন্দৰ্য থাক সে সৌন্দৰ্য মায়া মাত্র, সে সৌন্দৰ্য্য সত্য নয়। রাণুর মতো ছোট মেয়ের সম্পর্কে এইরূপ ভাবা অমূলক বলে মনে হতে পারে, কিন্তু রাণুর চিঠিগুলি পড়লে রবীন্দ্রনাথের আশঙ্কর কারণটি বোঝা যায়। কিন্তু রবীন্দ্রনাথও চাইছিলেন রাণুকে কাছে রাখতে। প্রায়ই চিঠি পরীক্ষার পরে ডিগ্রির মোহ ত্যাগ করে বিশ্বভারতীতে ভর্তি হওয়ার জন্য। ১৯২৩-এ গ্রীষ্মের ছুটিতে কোনো খবর না দিয়ে রাণু যখন হঠাৎ শান্তিনিকেতনে এসে উপস্থিত হলেন, তখন তাঁর পিতাকে জানালেন, আমরা দেরাদুনে যাচ্চি সেখানে একে নিয়ে যাব।' দেরাদুনে যাওয়া হয় নি, তাকে (tes