পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাতাশ টাকা মাইনেয় তোমার প্রাইভেট সেক্রেটারি হতুম তাহলে ছুটির জনো আমাকে দরখাস্ত করতেই হত না— কাজ করবার জন্যেই করতে হত। তাই আমি স্থির করে রেখেচি তখন তোমার সেক্রেটারির পদের জন্য এখন থেকে দরবার করে রেখে দেব। তাহলে, আমি নিশ্চয় জানি আমার রঙীন কাপড়ের বরাদ্দ হয়ে যাবে, আর চুলের জন্যে ভাবতে হবেনা— বোধহয় সের পাঁচ ছয় দুধও রোজ বিনি পয়সায় পাব।— আমাদের এখানে প্রায়ই খুব বৃষ্টি হচ্চে। এক একদিন বিষম জোরে বাতাস দেয় আর বৃষ্টির ধারাগুলো বেঁকে একেবারে তীরের মত সীধে [য] ঘরের মধ্যে চলে আসে। এখানে গরম নেই বল্লেই হয়— আর চারিদিকের মাঠ একেবারে ঘন সবুজ হয়ে উঠেচে। বোলপুরকে এত সবুজ আমি আর কখনোই দেখিনি। গাছগুলো নিবিড় পাতার ভারে থাকে থাকে ফুলে উঠেচে– ঠিক যেন সবুজ মেঘের ঘটার মত। আমাদের বিদ্যালয়ের কুয়োগুলো প্রায় কানায় কানায় ভরে উঠেচে। এবারে চারিদিকে অনেক গাছ পুতে দিয়েচি। সেগুলো যখন বড় হয়ে উঠবে তখন আমাদের আশ্রম আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। কিন্তু এখানকার শুকনো বেলেমাটিতে গাছপালা ভারি দেরিতে বেড়ে ওঠে— আমি আটাশ বছরে পড়বার আগে এসব গাছে ফুল ধরা দেখতেই পাব না। তুমি যদি নবেম্বরে আমাদের আশ্রমে এস তাহলে ততদিনে এখানে অনেক বদল দেখতে পাবে। এ বৎসরটা আমাদের আশ্রমের পক্ষে খুব তেজের বৎসর— যেমন ঘন ঘন বৃষ্টিতে গাছপালা দেখতে দেখতে পূর্ণ হয়ে উঠচে, তেমনি এখানকার কাজের দিকেও খুব একটা উৎসাহ পড়ে গেছে — পড়াশুনো কাজকৰ্ম্ম যেন নতুন জোর পেয়েছে— সেই জন্যে ছেলেদের মধ্যেও খুব একটা আনন্দ জেগে উঠেচে। আমি যে আমেরিকায় যাবার টিকিট কিলেও গেলুম না, এখানে থেকে গেলুম, তার পুরস্কার পেয়েছি। আমাদের আশ্রমলক্ষ্মী বোধ হয় আমার অদৃষ্টের সঙ্গে যড়যন্ত্র করে আমার বিদেশে అతి