পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাময়িকের হাটের খাচার মধ্যে পরস্পরের খোঁচাখুচি জাগিয়ে তুলব ? অতএব যাকগে। আমার দরজার সামনেই সজনে গাছের পাতা ঝরে গেল, আবার কচি পাতা ওঠবার রোমাঞ্চ দেখা দিয়েছে। প্রৌঢ় বসন্তের পারের খেয়া এখন চৈত্রমাসের মধ্যস্রোতে ; মধ্যাহ্নের তপ্তহাওয়ায় গাছে গাছে দোলাতুলি লেগেছে ; উড়তি ধূলোয় আকাশের নীলিমাতে ধুসরের আভাস দিয়েছে— চারদিকে নানা পাখীর কলকাকলী। এরা সবাই মিলে আত্মবিস্মৃত চলতি প্রাণের হিল্লোল জাগিয়ে চলেছে— এদেরি মধ্যে মনটাকে ছড়িয়ে দিই না কেন, এই নিরস্তর বহমান অনিত্যের স্রোতে সাতার কেটে যাই না কেন ? অার ক’দিনই বা বাচব ? একে আমরা বলি মায়া, কিন্তু এই তো বাস্তব, খ্যাতিই তো মায়া, সেই তো প্রেতের অন্ন। বর্তমান অন্নপূর্ণার প্রাঙ্গণে আমি রবাহুত, আমার জন্ত্যে পাত পাড়া রয়েছে, নানা রসের আয়োজন, ভোজ শেষ করে দিয়ে যাই, সন্ধে হয়ে এল। বইগুলো পেয়েছ— তাতে আমার উচ্ছেদ চিহ্ন দেখেছ। কিন্তু মনে কোরো না তাতেই আছে আমার চরম বিচার । স্পষ্ট অনুভব করেছি বিস্তর আবর্জনা আছে। অামার কোনো মমতা নেই, বরঞ্চ লজ্জাই আছে। সম্মার্জনার জন্যে আমার পরামর্শ বাহুল্য। যে কোনো আমার ইংরেজ কবিবন্ধু যেরকম করেই ওগুলো নিয়ে বর্জন মার্জন করুন আমার তাতে লেশমাত্র আপত্তি ঘটবে না। তুমি তাদের সম্মতি নিয়ে যা দাড় করাবে তাতেই অামি স্বাক্ষর দেব। এ কথা আমি নিশ্চিত জানি ওর মধ্যে থেকে বিস্তর ত্যাগ করা উচিত। > @ ミ