পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি তো সর্বদাই কিছু না কিছু লিখি, বেকার বসে কখনো থাকি ন। কিন্তু সেসব লেখা কি কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথের কাছে লেখা বলে গণ্য হবার ধোগ্য। তাই তিনি আমাকে যখনই জিজ্ঞাসা করেন আমি কিছু লিখছি কি না, তখনই আমি আমার লেখার বিষয় গোপন করে বলি, না আমি কিছুই লিখছি না। আমি কিছুই লিখছি না শুনে তিনি বললেন—“দেখ, সরস্বতী স্ত্রীলোক, তাকে বশ করতে হলে কেবল সাধ্যসাধনায় তার মন পাওয়া যাবে না, তার উপরে মাঝে মাঝে কড়া হুকুম করাও দরকার। জানো তো যে মেয়েরা কড়া স্বামী ঝাল লঙ্ক আর জে"দা টক পছন্দ করে । তুমি একটু হুকুম ক’রে দেখো, ঠিক বশ মানাতে পারবে।” অামি বললাম— একটা প্লট পেলে লিখতে চেষ্টা করতে পারি। কবি একটু উন্মনা হয়ে বললেন—“প্লট । আচ্ছ ধরে।.” তার পর যে গল্পের কাঠামো বললেন তাকে আমি ‘দুই তার’ নামক উপন্যাসে রূপ দিতে চেষ্টা করেছি। এর পরে আমার হেরফের’ উপন্যাসের প্লট বোলপুরে পেয়েছিলাম, আর ধোকার টাটির প্লট তিনি আমাকে শিলং পাহাড় থেকে পত্রে লিখে পাঠিয়েছিলেন, যদিও রামযাদুর চিত্র এ-কে আমি অনেকের বিরাগভাজন হয়েছি। একবার মাঘোৎসবের দিন আমি জোড়াশাকের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। আমি যেতেই দারোয়ান আমাকে বললে—“বাৰুমশায় আপনাকে দেখা করতে বলেছেন।” বন্ধুরা সব সভায় গেল, আমি কবির সঙ্গে দেখা করতে র্তার বাড়ীর উপর তলায় একেবারে পশ্চিমের দিকের ঘরে গেলাম। কি জন্যে আমাকে ডেকেছিলেন তা আমার এখন মনে নেই, কিন্তু সেদিন আমি আর একটি যে দৃশ্ব দেখেছি তা আমার মনে মুদ্রিত হয়ে আছে। দারোয়ান এসে খবর দিলে একজন লোক বাবুমশায়ের সঙ্গে দেখা করতে চায় । ૨ ૨૭