পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকলে অত্যাচারের সীমা থাকে না । যে প্রজা অতিসহিষ্ণু, রাজাকে সে ধৰ্ম্মভ্রষ্ট করে । সেই অন্যায়ের দায়িত্ব প্রজার নিজের দুৰ্ব্বলতায় । তুৰ্ব্বল নিজে দুঃখ পায় পাক, কিন্তু তুৰ্ব্বলতা অপরাধ হয়ে ওঠে যখন সে সবলের চরিত্রকে বিকৃত করে দেয় । এই জন্তেই অন্যায়কে নিশ্চেষ্টভাবে সহ করাও অন্যায়। রাজার হাতে অস্ত্রের অস্ত নেই প্রজার হাতে একটিমাত্র প্রতিরোধের উপায় অাছে সে হচ্চে বয়কটু। যদি অভ্যস্ত আরাম থেকে বঞ্চিত হওয়া সত্ত্বেও বাঙালী এই বয়কট পদ্ধতির ভিতর দিয়ে অত্যাচারের প্রতি ধৰ্ম্মরাজের অপ্রসন্নতাকে প্রকাশ না করে তাহলে যে পৰ্য্যন্ত না দৈন্তে দুঃখে ম্যালেরিয়ায় পুলিশের গুতোয় সে ভবযন্ত্রণা থেকে সম্পূর্ণ নিস্কৃতি পায় ততদিন বিদেশের আমদানি মোটামোটা কানমলাই তার পুরুষানুক্রমে নিরবচ্ছিন্ন পথ্য। তাই, আমাদের শাসনকৰ্ত্তাদের প্রতি লয়ালটিবশতই তাদের প্রতি কৰ্ত্তব্যপালনের উদ্দেশে আমি বয়কটের সমর্থন করি । রাজধৰ্ম্ম অমিত্রাক্ষর ছন্দে কাব্য লিখতে শুরু করেচে– তার রচিত লাইনের মিল আমাদের লাইনে যদি জোগাতে পারি তাহলেই অমিত্রত ঘুচে গিয়ে মিত্রাক্ষরের চলন হবে – কৰ্ণপীড়া বেঁচে যাবে । এই কৰ্ণ পীড়নের উদ্যোগট রাজার দিক থেকে বিরাট মাত্রায় ঘনিয়ে আসচে– ধৰ্ম্মের দোহাই মানবে না— মানবে দুঃখের দোহাই । অতএব নিজের দুঃখ স্বীকার করেও যথাস্থানে দুঃখপ্রয়োগ করতে হবে। সব চেয়ে সাধুভাবে এ কাজ করবার উপায় হচ্চে বয়কট – সময় নেই। অতএব চললুম। ইতি ১০ ডিসেম্বর ১৯৩১ দাদ