পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাচতে যদি যথেষ্ট বিদ্যালোচনার দ্বারা তোমার স্বাভাবিক তীক্ষবুদ্ধির সমর্থন পাবার সুযোগ তোমার ঘটত। তা হোক, মতে ও আচারে আমার সঙ্গে তোমার যতই পার্থক্য থাক তবু কখনো তোমাকে অশ্রদ্ধা করি নে। সেই পার্থক্যের পরিবেষ্টনের ভিতর থেকে তুমি তোমার মত ও বিশ্বাস নিয়ে তোমার চিঠিতে যে সব আলোচনা করে, এবং যে সব ভাষাচিত্র পাঠাও সে আমার বিশেষ ভালো লাগে । তার একটা কারণ আমি অনেক কথা জানতে পারি যা আমার জানবার উপায় নেই– কিন্তু তার চেয়ে আর বড়ো কথা, তোমার লেখার মধ্যে এমন একটা স্বাভাবিকত। ও উজ্জলতা আছে যা তুলভ— স্বত-উৎসারিত সাহিত্যরসে সে আমাকে আনন্দ দেয় । সুসংলগ্ন করে বিস্তারিত করে লেখবার সাধনা যদি তোমার পাকা হোতে তাহলে সাহিত্যে তুমি কৃতিত্ব লাভ করতে পারতে । বিশেষত মেয়েরা বাংলা ভাষায় যে সব লেখা আজকাল লেখে তা এমনি দুৰ্ব্বল, বানানো, নকল করা জিনিষ যে তোমার লেখবার স্বাভাবিক শক্তি ও সাহস দেখে দুঃখ হয় তুমি সাহিত্যে প্রবেশ করতে পারে নি। প্রবেশ করলে তোমার প্রতিভার সাহসিকতা দেখে অনেকেই তোমাকে অজস্র গাল দিত ; কিন্তু অযোগ্য নিন্দুকদের গালের দ্বারাই তোমার যথার্থ বিচার হোতে। তোমার বুদ্ধি ও শক্তি ভূমিকম্পে বিদীর্ণ উর্বর ভূমি— জোড় লাগবার সুযোগ পেল না। যা হোক তোমার চিঠি থেকে আমি যথেষ্ট আনন্দ পেয়েছি— সে চিঠি প্রকাশ হতে পারবে না এইটেই আক্ষেপের বিষয় । কিছুদিন হোলো তোমার চিঠিতে অত্যন্ত অদ্ভুত যে সংশয় ૨ ? S