পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি আমাদের দেশের সমাজকে অন্তরঙ্গ ভাবে জানি নে । তাই গল্প যখন লিখি ছবিতে ফাক থাকে, পাশ কাটিয়ে চলতে হয় । তোমার চিঠিগুলিতে খাটি বাঙালীঘরের হাওয়া পাই । বিদেশে থাকবার সময় এক একদিন হোটেলের কেদারায় ঠেসান দিয়ে মুলতান সুরে গুনগুন করে গান গাই, মনে রইল সই মনের বেদনা”, আমনি বাংলা দেশের মেয়ের করুণ হৃদয়ের স্পর্শ মনে এসে লাগে। তোমার চিঠির বিচিত্র আলোচনায় বাঙালী মেয়ের অস্তরের সুরটি স্পষ্ট করে ফুটে ওঠে— আমার ভালো লাগে । হাসি পায় যখন তোমার চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করো যে আমার রাগ হচ্চে। তুমি কি মনে করে মতামতের গদাযুদ্ধ করা আমার স্বভাব ? যেখানে আমি রস পাই, সেখানে তর্কের বিষয়টা আমার কাছে গা-ঢাকা দেয়, সেখানে কিছুই অামার পক্ষে বেগানা নয় । বৈষ্ণব যেখানে বোষ্টম নয় সেখানে আমিও বৈষ্ণব, খৃষ্টান যেখানে খেষ্টান নয় সেখানে আমিও খৃষ্টান । আমাদের দেবপূজায় বিদেশী ফুলের স্থান নেই, কিন্তু আমার মনের কাছে সব ফুলই ফুল, সোলার ফুল ছাড়া । নিজের মধ্যে যা খাটি বিশ্বের সত্যকে তা স্পর্শ করে । ভ্রাণেন অৰ্দ্ধভোজনং– রাজসাহী জেলার রান্নার যে গন্ধ তোমার চিঠি থেকে পাওয়া গেল সেটা লোভনীয়, মৃত্তনিতে এসেই থামবার দরকার নেই। আমার মুঞ্চিল এই, আমার এ বয়সে উপাদেয় ভোজ্যের সমাদর রসনা পর্য্যন্ত, পাকযন্ত্র পৰ্য্যন্ত নয়। এত কম খাই যে, যদি তার বিবরণ প্রচার করি তবে আমাদের দেশের লোকে আমাকে মহাপুরুষ বলে মনে \oy