পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যখন করি তখন বলে থাকি পাঠাটা প্রতীকমাত্র আসল জিনিষটা হচ্চে মনের পাপ । কিন্তু ব্যাখ্যাটা মুখের কথা, কৰ্ম্মটাই বাস্তব, তাই পাপটা যেখানকার সেখানেই থেকে যায় বরঞ্চ কিছু বেড়ে ওঠে মাঝের থেকে হতভাগা প্রতীকটা পায় দুঃখ। প্রতীকের উপর দিয়েই যত ফাকি চালিয়ে দিয়ে মানুষ আপন বুদ্ধিকে আপন মনুষ্যত্বকে বিদ্রপ করে, আপন সাধনাকে দুর্বল ও লঘু করে দেয় । পুনশ্চ ব্যাখ্যা করবার সময় বলা হয়, যারা অজ্ঞান তাদের পক্ষেই এই বিধি । কিন্তু যারা অজ্ঞান তাদের অজ্ঞানকেই প্রশ্রয় দিয়ে চিরস্থায়ী করার দ্বারাই মুক্তির পন্থা সুগম করা হয় এ কথা মানতেই পারি নে। চিরজীবন পাঠাবলি দিয়ে এবং বলির সংখ্যা ভীষণভাবে বাড়িয়ে তোলার রক্তসিক্ত পথ দিয়ে কয়জন পূজক অবশেষে বাহিরের ঐ পাঠা থেকে অস্তরের পাপের ঠিকানায় পৌছেছে ? যারা জ্ঞানী তাদের তো কোনো ভাবনাই নেই, তারা সকল ক্ষেত্রেই স্বতই ঠিক পথ বেয়ে চলে, যারা অজ্ঞান তাদের মুগ্ধ করে রাখলে মোহের অন্ত তারা পাবে না। এই কারণেই এ দেশে বহুযুগ থেকেই পুণ্যলুব্ধ মানুষ পাণ্ডার পায়ে মোহর ঢেলে আসচে, দেশের লোকের গভীর দুঃখ যেখানে সেখানকার জন্তে, না মন, না ধন কিছুই রইল বাকি। এ সম্বন্ধে দোষ দেবার বেলা আমরা অার এক প্রতীককে পাকড়াও করেছি, সে হচ্চে ঐ বিদেশী । সন্দেহ নেই বিদেশীর হাত দিয়ে মার খেয়ে থাকি কিন্তু সেই বিদেশীকে দিয়ে আমাদেরকে আঘাত করাচ্চে কে ? অামাদের ভিতরকার সেই পাপ সেই কলি যে চিরদিন দেশের মানুষকে নানা প্রকারে বঞ্চিত করে এসেচে— (? (?