পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ চিঠিপত্র রক্তের টান, সে বলে পদে পদে আমি নগদ মজুরি চাই— আর একটা ইচ্ছে বলে, আমি মজুরি চাইনে আমি হজুরী চাই– কৰ্ত্ত হ’ব । মেয়ের বিয়েতে পণ নেবার প্রস্তাবে কৰ্ত্তায় গিন্নিতে মতভেদ হলে যেমন হয় এও তেমনি– কৰ্ত্তা মাথা উচু করে বলচেন আমি এক পয়সা চাইনে— গিরি লুকিয়ে কৰ্ত্তাকে ভাড়িয়ে ফর্দ পাঠাচ্চেন। এমন স্থলে প্রায় গিন্নিরই জিৎ হয়। যাই হোক মনের মধ্যে থেকে থেকে আশা হয় যে, একটা রাস্ত পাব।— কেননা বেদন যে মরেনি, অসাড় হয়নি মন। সব সময়ে পথ দেখতে পাইনে বটে কিন্তু দূরের আলোটা দেখতে পাই তো— তাতেই রাত্রের কোনো একটা প্রহরে বাসায় ফেরাবে। এই গেল আমার বর্তমানের মনের কথা । তার পরে সংসারের অনেক কথা আছে, তাতে • মনটাকে কম পীড়া দেয়নি - র কথা ভেবে কোনো কিনারা পাইনে, কেবল ভিতরে একটা নিরস্তুর কান্না থেকে যায়। তার উপরে যে কাজ ঘাড়ে নিয়েচি, তার বোঝা কিছুতেই হাল্কা হতে চায় না— অথচ মন দেহ শ্রান্ত হয়ে পড়েচে– শিথিল ক্লাস্তহাতে দাড় ধরে গান গাচ্চি— মাঝি তোর বৈঠা নে রে, আমি আর বাইতে পারলাম না ৷ সবুজপত্রের জন্যে হাল আমলের গোটাকয়েক গান পাঠাই । তোরা উভয়ে আমার আশীৰ্ব্বাদ নিবি। ইতি ৯ অক্টোবর ১৯২৬ রবিকাকা