পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড ১৯৪২)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२br চিঠিপত্র পারিনে— কিন্তু তোমরাও যদি মনের এই শান্তিটি রক্ষা করতে, পারতে তাহলে বোধ হয় পরস্পরের চেষ্টায় সবল হয়ে আমিও সন্তোষের শান্তি লাভ করতে পারতুম । অবশ্য তোমার বয়স আমার চেয়ে অনেক অল্প, জীবনের সবর্বপ্রকার অভিজ্ঞতা অনেকটা সীমাবদ্ধ, এবং তোমার স্বভাব একহিসাবে আমার চেয়ে সহজেই শান্ত সংযত এবং ধৈর্য্যশীল । সেইজন্যে সৰ্ব্ব প্রকার ক্ষোভ হতে মনকে একান্ত যত্নে রক্ষা করবার প্রয়োজন তোমার অনেক কম । কিন্তু সকলেরই জীবনে বড় বড় সঙ্কটের সময় কোন না কোন কালে আসেই– ধৈৰ্য্যের সাধনা, সন্তোষের অভ্যাস কাজে লাগেই । তখন মনে হয় প্রতিদিনের যে সকল ছোট খাট ক্ষতি ও বিঘ্ন, সামান্ত আঘাত ও বেদনা নিয়ে আমরা মনকে নিয়তই ক্ষুঃ ও বিচলিত করে রেখেছি সে সব কিছুই নয়। ভালবাসব এবং ভাল করব— এবং পরস্পরের প্রতি কৰ্ত্তব্য সুমিষ্ট প্রসন্নভাবে সাধন করব— এর উপরে যখন যা ঘটে ঘটুকু। জীবনও বেশি দিনের নয় এবং সুখদুঃখও নিত্য পরিবর্তনশীল । স্বার্থহানি, ক্ষতি, বঞ্চনা — এ সব জিনিষকে লঘুভাবে নেওয়া শক্ত, কিন্তু না নিলে জীবনের ভার ক্রমেই অসহ্য হতে থাকে এবং মনের উন্নত আদর্শকে অটল রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে । তাই যদি না হয়, যদি দিনের পর দিন অসন্তোষে অশান্তিতে, অবস্থার ছোট ছোট প্রতিকূলতার সঙ্গে অহরহ সংঘর্ষেই জীবন কাটিয়ে দিই — তা হলে জীবন একেবারেই ব্যর্থ। বৃহৎ শাস্তি, উদার বৈরাগ্য, নিস্বার্থ প্রীতি, নিষ্কাম কর্ম— এই হল জীবনের