পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৩৫

 আমার শেষ কথা মুখ হইছে বাহির হইতে না হইতে জহর এক বিকট চীৎকার করিয়া উঠিল। পরক্ষণেই সে কাঁপিতে কাঁপিতে শুইয়া পড়িল, সঙ্গে সঙ্গে তাহার জ্ঞানলোপ হইল।

 বৃদ্ধ দৌড়িয়া জহরের নিকট গেল, আমিও তাহার পার্শ্বে বসিয়া মূর্চ্ছা ভাঙ্গাইবার চেষ্টা করিতে লাগিলাম। একটী যুবতীও ঘোমটা দিয়া সেই ঘরে আসিল, এবং দূর হইভে জহরকে দেখিতে লাগিল।

 প্রায় আধ ঘণ্টার পর জহরের জ্ঞান হইল। সে চক্ষু উন্মীলন করিল। সম্মুখেই আমাকে দেখিতে পাইল। আমার দিকে চাহিয়াই অট্টহাস্য করিয়া উঠিল। অনেকক্ষণ ধরিয়া হাসিল। হাসি থামিলে সে চুপ করিয়া রহিল—কোন কথার উত্তর দিল না। অনেক লোভ দেখাইলাম, নানা রকম ভয় দেখাইলাম, কিন্তু কিছুতেই কিছু হইল না। জহরলাল তখন সত্য সত্যই উন্মাদ পাগলের মত ব্যবহার করিতে লাগিল দেখিয়া, আমি বৃদ্ধের নিকট হইতে একটা মাদুলী লইয়া, তাহাতে ঔযধরূপে শুষ্ক বিল্বপত্র দিয়া বৃদ্ধকে ফিরাইয়া দিলাম। তাহার পর আর সেখানে বিলম্ব না করিয়া অফিসের দিকে আসিলাম। অফিসে ছদ্মবেশ ত্যাগ করিয়া গৃহে ফিরিলাম।


পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

 যখন বাড়ীতে ফিরিয়া আসিলাম, তখন রাত্রি আটটা বাজিয়াছে। কিছুকাল বিশ্রাম করিয়া, আহারাদি শেষ করিয়া শয়ন করিলাম।