পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারোগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

লোকটা যে রকম করিয়া সেই বাড়ীতে প্রবেশ করিয়াছিল, তাহা দেখিলে, আপনিও আশ্চর্য্যান্বিত হইবেন, তখন লোকটাকে একজন পাকা চোর বলিয়া বুঝিতে পারিবেন।

 আমি বলিলাম, “যদি তুমি আমাকে জোড়াসাঁকোয় লইয়া যাও, তাহা হইলে দেখিয়া আসিতে পারি। কিন্ত সে যাহাই করুক না কেন, যখন সে পাগল, আবার যখন কিছুই লয় নাই, তখন তাহাকে কিছুই করা যাইতে প্রারে না। তথাপি চলুন, আমরা গিয়া দেখিয়া আসি।”

 এই বলিয়া আমি চাকরকে একখানি গাড়ী ডাকিয়া আনিতে বলিলাম, গাড়ী আনীত হইলে, আমি ইন্‌স্পেক্টারকে লইয়া তাহাতে উঠিলাম। ইন্‌স্পেক্টার গাড়োয়ানকে যোড়াসাঁকো যাইতে আদেশ করিলেন।

 প্রায় আধ ঘণ্টার পর আমরা জোড়াসাঁকোর মুখুয্যেবাড়ীতে উপস্থিত হইলাম। বাড়ীর কর্ত্তা বাড়ীতেই ছিলেন। তিনি আমাদিগের আগমন-বার্ত্তা পাইয়া তাড়াতাড়ি দরজায় আসিলেন, এবং অতি সমাদরে বাড়ীর ভিতর লইয়া গেলেন। দেখিলাম, জহরলাল অনেকগুলি জিনিষ নষ্ট করিয়াছে। তাহার মধ্যে এক কালিপ্রতিমা এমন করিয়া ভাঙিয়াছে যে, তাহার আর কোন চিহ্ন নাই। একখানা ইট দিয়া যেন গুঁড়াইয়া ফেলিয়াছে। আরও আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, অপর জিনিষগুলি যেখানে ভাঙ্গা পড়িয়াছিল, প্রতিমাখানি সেখানে গুড়ান হয় নাই। উহাকে একটী নিভৃত স্থানে লইয়া গিয়া জহর সে কার্য্য করিয়াছে। কিছুক্ষণ চারিদিক ভাল করিয়া নিরীক্ষণ করিলাম। পরে জিজ্ঞাসা করিলাম, “কোন্ কোন্‌ জিনিস চুরি গিয়াছে?”