বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছড়া

টেবিলেতে তুফান ওঠে চা-পেয়ালার তলে,
বিষম লেগে শৌখিনদের চোখ ভেসে যায় জলে।
বিদ্যালয়ের মঞ্চ-’পরে টাক-পড়া শির টলে―
পিঠ পেতে দেয়, চড়ে বসে টেরিকাটার দলে।
গুতাে মেরে চালায় তারে, সেলাম করে আদায়,
একটু এদিক-ওদিক হলে বিষম দাঙ্গা বাধায়।
লােকে বলে, কলঙ্কদল সূর্যলােকের আলাে
দখল করে জ্যোতিলোকের নাম করেছে কালাে।
তাই তাে সবই উলট-পালট, উপর-নামন নীচে,
ভয়ে ভয়ে নিচু মাথায় সমুখটা যায় পিছে।
হাঁচির ধাক্কা এতখানি এটা গুজব মিথ্যে―
এই নিয়ে সব কলেজ-পড়া বিজ্ঞানীদের চিত্তে
অল্প কিছু লাগল ধোঁকা; রাগল অপর পক্ষে―
বললে, পড়াশুনােয় কেবল ধুলাে লাগায় চক্ষে।
অন্য দেশে অসম্ভব যা পুণ্য ভারতবর্ষে
সম্ভব নয় বলিস যদি প্রায়শ্চিত্ত কর্‌-সে।
এর পরে দুই দলে মিলে ইট-পাটকেল ছোড়া,
চক্ষে দেখায় সর্ষের ফুল, কেউ বা হল খোঁড়া―
পুণ্য ভারতবর্ষে ওঠে বীরপুরুষের বড়াই,
সমুদ্দুরের এ পারেতে একেই বলে লড়াই।
সিন্ধুপারে মৃত্যুনাটে চলছে নাচানাচি,
বাংলাদেশের তেঁতুলবনে চৌকিদারের হাঁচি।

১০