পাতা:ছন্দপতন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছন্দপতন কাল সকালে তমালকে কবিতাটি শোনাতে হবে। কিছুদিন আগে উদ্বাস্তু কলোনির ধারে রাস্তার কালে জল নিতে এসে দাড়িয়ে যে পথচারী বাস-চারী মোটর-চারী সকল মানুষের দিকে তাকিয়েছিল মনুষ্যত্বের সহজ সতেজ দাবী নিয়ে, তার দিকে কে কি ভাবে তাকাচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ অগ্ৰাহ্যু করে দিয়ে। তমাল যদি মানে বোঝে আমার কবিতার, তার যদি ভাল লাগে আমার কবিতাটি— এ জগতে আর কোন ভক্ত বা সমালোচকের সাটিফিকেট আমার দরকার হবে না। জানি, এ সিদ্ধান্ত অনেকের মনে প্রশ্ন জাগাবে যে শেষ বিচারের ভার তামালের উপর ছেড়ে দেবার মানে কি ? সে না - হয় প্রেরণা জুগিয়েছিল একটি কবিতা লেখার, কিন্তু কাব্যবিচারের বিশেষ কোন ক্ষমতা কি তার আছে ? তার এই বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কোন কথাই তো বলা হয় নি ? সাধারণ একটি উদ্বাস্তু মেয়ে হিসাবেই বরং তার পরিচয় দেওয়া হয়েছে। আমার কবিতার চরম বিচারের অধিকারিণী হবার মত অসাধারণ গুণ সে পেল কোথায় ? সে গুণটাই বা কি ? কথাটা পরিষ্কার করে বলা দরকার। তমালের সঙ্গে আমার পরিচয় সামান্য- আমি লক্ষ্মীদের পড়াতে যাই আর সে গান শেখাতে যায়, এই সূত্ৰে ভাসা ভাসা ভাবে একটু আলাপ হয়েছে মাত্র । কোন অসাধারণত্ব যদি এই মেয়েটির থেকে থাকে। আমি সত্যই তার খোজ রাখি নি । S80