রবীন্দ্রনাথ বলেন, এর কোমর ভেঙে গেছে (পৃ ৭২)। এর কারণ অসম- ও বিষম-পর্বিক ছন্দের ‘শোষণশক্তি’ অর্থাৎ সংকোচনক্ষমতা নেই। কিন্তু এসব ছন্দ যে যুগ্মধ্বনিকেই সইতে পারে না তা নয়। তার দৃষ্টান্তও রবীন্দ্রনাথ দিয়েছেন (পৃ ৭২)।—
অন্ধ রাতে যবে | বন্ধ হল দ্বার।
এখানে যুগ্মধ্বনিগুলি সংকুচিত না হয়ে সম্প্রসারিতই হয়েছে।
দ্বিপদী শব্দটি রবীন্দ্রনাথ ব্যবহার করেন নি। অবশ্য এক স্থানে (পৃ ১১৮) ওই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু পারিভাষিক অর্থে নয়।
ধামার—দ্রষ্টব্য ‘তাল’।
ধ্বনি (পৃ ৫৩)—অপারিভাষিক অর্থে ধ্বনি মানে স্বর বা রব। যেমন— কুহুধ্বনি, ধ্বনিমাধুর্য। ছন্দশাস্ত্রের পরিভাষায় ধ্বনি মানে সিলেব্ল্ অর্থাৎ একপ্রযত্নোচ্চারিত শব্দাংশ (পৃ ৫৩, ৭৪, ৯০)। র+বীন্+দ্র শব্দে তিনটি ধ্বনি বা সিলেব্ল্। ছন্দের আলোচনায় ধ্বনি শব্দটি যখন লঘু, গুরু, অযুগ্ম, যুগ্ম প্রভৃতি বিশেষণাধীন অথবা গণনীয় বিষয় হয়, তখনই এটি সিলেব্ল্ অর্থে স্বীকার্য। আকৃতিভেদে ধ্বনি দ্বিবিধ, অযুগ্ম এবং যুগ্ম। দৈ, বৌ, দুই্, ঢেউ্ প্রভৃতি রুদ্ধস্বরান্ত এবং জল্, তান্, দিন্, কুল্, শেষ্ প্রভৃতি ব্যঞ্জনান্ত ধ্বনিকে বলা যায় যুগ্মধ্বনি (closed syllable) এবং মা, কি, নু, সে, দো প্রভৃতি মুক্তস্বরান্ত ধ্বনিকে বলা যায় অযুগ্মধ্বনি (open syllable)। ‘সৌভাগ্য’ শব্দে সৌ এবং ভাগ্ যুগ্মধ্বনি, গ্য অযুগ্মধ্বনি। সুতরাং ‘যুগ্মধ্বনি’ শব্দটার পরিবর্তে শুধু ‘সিলেব্ল্’ শব্দ ব্যবহার করাই যথেষ্ট নয় (পৃ ৫৩)। দ্রষ্টব্য ‘দল’।
পংক্তি (পৃ ১৫৩)—অপারিভাষিক অর্থে পংক্তি মানে লাইন বা ছত্র (পৃ ১০৭)। পারিভাষিক অর্থে অপ্রবহমান বন্ধের পূর্ণযতিবিভাগের নাম পংক্তি।
প্রবহমান বন্ধেও অপ্রবহমান বন্ধের নির্দিষ্ট পূর্ণযতি-বিভাগকেই