পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২১
ছন্দ
২১

মংগীত ও ছন্দ

অনেকদিন হইতেই কবিতা লিখিতেছি, এইজন্য যতই বিনয় করি না কেন, এটুকু না বলিয়া পারি না যে, ছন্দের তত্ব কিছু কিছু বুঝি। সেই ছন্দের বোধ লইয়া যখন গান লিখিতে বসিলাম, তখন চাদ সদাগরের উপর মনসার যে-রকম আক্রোশ, আমার রচনার উপর তালের ওত্তাদী দেবতা তেমনি ফোস করিয়া উঠিলেন। আমার জানা ছিল ছন্দের মধ্যে যে-নিয়ম আছে তাহা বিধাতার গড়া নিয়ম, তা কামারের গড়া নিগড় নয়। স্থৃতরাং তার সংষমে সংকীর্ণ করে না, তাহাতে বৈচিত্ত্যকে উদ্ঘাটিত করিতে থাকে । সেই কথা মনে রাখিয়া বাংলা কাব্যে ছন্দকে বিচিত্র করিতে সংকোচ বোধ করি নাই ।

কাব্যে ছন্দের যে কাজ, গানে তালের সেই কাজ। অতএব ছন্দ যে-নিয়মে কবিতায় চলে তাল সেই নিয়মে গানে চলিবে এই ভরসা! করিয়া গান বাধিতে চাহিলাম। তাহাতে কী উৎপাত ঘটিল একট! দৃষ্টান্ত দিই। মনে করা যাক আমার গানের কথাটি এই ।--

কীপিছে দেহলত। থরথর, চোখের জলে আঁখি ভরভর । দৌছুল তমালেরি বনছাঁয়! তোমার নীলবাসে নিল কাঁয়া, বাদল নিশীখেরি ঝরবর তোমার জশীখি'পরে ভরভর | যে কথ। ছিল তব মনে মনে চমকে অধরের কোণে কোণে ।