অনেক দুঃখে, বহু বেদনায় অভিমানে অনুরাগে,
ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।
রানার! রানার!
এ বােঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?
রাত শেষ হ’য়ে সূর্য উঠবে কবে?
ঘরেতে অভাব; পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালাে ধোঁয়া,
পিঠেতে টাকার বােঝা, তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,
রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে,
দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে
কত চিঠি লেখে লােকে—
কত সুখে, প্রেমে, আবেগে, স্মৃতিতে, কতাে দুঃখে ও শােকে
এর দুঃখের চিঠি প’ড়বে না জানি কেউ কোনাে দিনও,
এর জীবনের দুঃখ কেবল জানবে পথের তৃণ,
এর দুঃখের কথা জানবে না কেউ শহরে ও গ্রামে,
এর কথা ঢাকা পড়ে থাকবেই কালাে রাত্রির খামে।
দরদে তারার চোখ কাঁপে মিটিমিটি,
এ-কে যে ভােরের আকাশ পাঠাবে সহানুভূতির চিঠি—
রানার! রানার! কি হবে এ বোঝা ব’য়ে?
কি হবে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষ’য়ে ক্ষ’য়ে?
রানার! রানার! ভাের তাে হ’য়েছে—আকাশ হ’য়েছে লাল,
আলাের স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল?
রানার। গ্রামের রানার!
সময় হয়েছে নতুন খবর আনার;
শপথের চিঠি নিয়ে চলাে আজ
ভীরুতা পিছনে ফেলে—
পৌঁছে দাও এ নতুন খবর
অগ্রগতির ‘মেলে’,
পাতা:ছাড়পত্র - সুকান্ত ভট্টাচার্য.pdf/৬৩
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪