পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እbኀዎግ মাভৈঃ মাভৈঃ । সপ্তাহের পর সপ্তাহ আসবে কিন্তু সপ্তাহ’ ? আর বের হবে না। অতএব বন্ধুবান্ধবেরা সকলে নিশ্চিন্ত হউন । ভেবে দেখুন কী করতে বসেছিলুম। সপ্তাহ বের করবার ছল করে জীবন থেকে সপ্তাহগুলো একেবারে লোপ করতে বসেছিলুম। এখন যেমন আমি সপ্তাহে সাতটা দিন করে পাই তখন সপ্তাহে সাতটা দিন বাদ পড়ত। মাসের পর মাস আসত, কিন্তু সপ্তাহ নেই ; দিনগুলো আমাকে লাঠি হাতে তাড়া করে বেড়াত । আমি কোথায় গিয়ে দাড়াব ভেবে পেতুম না । হরিশ্চন্দ্র যেমন বিশ্বামিত্রকে সমস্ত পৃথিবী দান করে বিব্রত হয়ে পড়েছিলেন, অবশেষে স্বর্গ টা পর্যন্ত অদৃষ্টে জুটল না, আমিও তেমনি আমার সমস্ত সময় পরের হাতে দিয়ে অবশেষে স্বৰ্গ পর্যন্ত খোওয়াতুম— কারণ, খবরের কাগজ লিখে এপর্যন্ত কেউ অমরলোক প্রাপ্ত হয় নি। এই বসন্তকাল এসেছে, দক্ষিণের হাওয়া বয়েছে, এ সময়টা একটু-আধটু গান-বাজনার সময়— এ সময়টা যদি কেবলই রুশ, চীন, পাঠানের অরাজকত্ব, মগের মুল্লুক, আবৃকারি ডিপার্ট - মেণ্ট, লুনের মাশুল, তারের খবর এবং পৃথিবীর যত শয়তানের প্রতি নজর রাখতে হয় তা হলে তো আর বঁচি নে। পৃথিবীর গুপ্তচর হয়ে বেঁচে কোনো সুখ নেই । জীবনে তো বসন্তকাল বেশি আসে না। যতদিন যৌবন ততদিন গোটাকতক বসন্ত হাতে পাওয়া যায়— সে ক’টা না খুইয়ে মনে করছি বুড়োবয়সে একটা খবরের কাগজ খুলব ; তখন হয়তো প্রাণ খোলা নেই, গান বন্ধ, সেই ১ সপ্তাহ’-নামক সাপ্তাহিক পত্র বাহির করার আয়োজন উপলক্ষে লিখিত । ૨ S a