পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭ জুলাই ১৮৮৭ বহুদিন চিঠিপত্র লিখি নি, কারণ চিঠি লেখা কম কাও নয়। দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে, কেবল বয়স বাড়ছে। ছ বৎসর আগে পচিশ ছিলুম, এইবার সাতাশে পড়েছি— এই ঘটনাটাই কেবল । মাঝে মাঝে মনে পড়ছে, আর কোনো ঘটনা তো দেখছি নে। কিন্তু সাতাশ হওয়াই কি কম কথা ! কুড়ির কোঠার মধ্যাহ্ন পেরিয়ে ত্ৰিশের অভিমুখে অগ্রসর হওয়া । ত্রিশ, অর্থাৎ বুনো অবস্থা। অর্থাৎ যে অবস্থায় লোকে সহজেই রসের অপেক্ষা শস্যের প্রত্যাশ করে— কিন্তু শস্তের সম্ভাবনা কই ? এখনো মাথা নাড়া দিলে মাথার মধ্যে রস থল থল করে— কই, তত্ত্বজ্ঞান কই ? লোকে মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করছে, তোমার কাছে যা আশা করছি তা কই ? এতদিন আশায় আশায় ছিলুম, তাই কচি অবস্থার স্যাম শোভা দেখেও সন্তোষ জন্মাত, কিন্তু তাই ব’লে চিরদিন কচি থাকলে তো চলবে না। এবারে তোমার কাছে কতখানি লাভ করতে পারব তাই জানতে চাই— চোখে-ঠুলি-বাধা নিরপেক্ষ সমালোচকের ঘানি-সংযোগে তোমার কাছ থেকে কতটুকু তেল আদায় হতে পারে এবার তার একটা হিসেব চাই।” আর তো ফাকি দিয়ে চলে না। এতদিন বয়স অল্প ছিল, ভবিষ্যতে সাবালক অবস্থার ভরসায় লোকে ধারে খ্যাতি দিত। এখন ত্রিশ বৎসর হতে চলল, আর তো তাদের বসিয়ে রাখলে চলে না। কিন্তু পাকা কথা কিছুতেই বেরোয় না শ্ৰীশবাবু! যাতে পাচ জনের কিছু লভ্য হয় এমন বন্দোবস্ত করতে পারছি নে। দুটো গান বা গুজব, হাসি বা তামাশা, এর চেয়ে বেশি আর কিছু হয়ে উঠল না। যারা প্রত্যাশা করেছিল তারা মাঝের থেকে আমারই উপর চটবে। কিন্তু কে তাদের মাথার দিব্যি দিয়ে Հ ծ