)\9e কলিকাতা ১৯ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪ ছেলেবেলা থেকে ঐ ফেরিওয়ালার হাকগুলো আমাকে কেমন একটু বিচলিত করে ; নিস্তব্ধ ত্বপুর বেলায় চিলের তীক্ষ ডাকটাও আমাকে যেন উদাস ক’রে দিত। অনেক দিন সেই ডাকটা আমার কানে আসে নি। আজকাল যে চিল ডাকে না তা নয়— আমারই এখন চিন্তা বেশি, কাজও ঢের ; প্রকৃতির সঙ্গে আর আমার সে রকম ঘনিষ্ঠ যোগ নেই। এখন সময় ফেলে রাখা চলে না ; যদি বা মনের গতিকে কোনো বিশেষ কাজ করতে প্রবৃত্তি না হয় তবু একটা কাজের চেষ্টা করতে হয়, নিদেন অন্ত্যমনস্কভাবেও একটা বই পড়বার ভান না করলে মন সুস্থ থাকে না । এটা কিন্তু কলকাতায় । মফস্বলে গেলে চুপ ক’রে চেয়ে থাকলেও হৃদয় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, কাজের অন্ধ দাসত্ব করতে হয় না। কর্তব্য কাজের বিরুদ্ধে কিছু বলতেই সাহস করি নে ; কিন্তু যখন উপস্থিত কোনো কাজ নেই কিম্বা ভালে ক’রে সম্পন্ন করবার শক্তি নেই, তখনো কেবল অভ্যাসবশত বা সময়যাপনের তাগিদে যদি কাজ খুজে বেড়াতে হয়, তখনো যদি আপনাকে নিয়ে আপনি শান্তি না পাওয়া যায়, তা হলে অবস্থাটা খারাপ হয়েছে বলতে হবে। কাজ একটা উদ্দেশ্বসাধনের উপায়মাত্র; মানুষ তো কাজের যন্ত্র নয় ; পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে বিরামলাভ করবার শক্তিটা একেবারে হারানো তো কিছু নয়, কেননা তার মধ্যেও মনুষ্যত্বের একটা উচ্চ অধিকার অাছে। দিন ও রাত্রি, কাজ ও বিরামের উপমা । দিনের বেলায় পৃথিবী ছাড়া আর আমাদের কিছুই নেই ; রাত্রে পৃথিবীটাই কম, অনন্ত জ্যোতিষ্কজগৎটাই বেশি। তেমনি কাজের দিনে যুক্তিতর্কের আলোকে পৃথিবীটাকেই খুব স্পষ্ট করে চোখের সামনে রাখা २९७
