পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>bra R | পূৰ্ব্বেই লিখেছি অপরাহ্লে আমি আপন মনে একাকী ছাতের উপর বেড়াই ; কাল সন্ধ্যাবেলায় আমার দুই বন্ধুকে দুই পাশ্বে নিয়ে অঘোরকে আমার পথপ্রদর্শক করে র্তাদের এখানকার প্রাকৃতিক শোভা সন্দর্শনকরানো আমার কৰ্ত্তব্য মনে করে বেরিয়ে পড়া গেল । তথন স্থৰ্য্য অস্ত গেছে কিন্তু অন্ধকার হয়নি । একেবারে দিগস্তের প্রাস্তে যেখানে গাছের সার নীলবর্ণ হয়ে দেখা যাচ্চে, তারি উপরেই ঠিক একটি রেখামাত্র খুব গাঢ় নীল মেঘ উঠে খুব চমৎকার দেখতে হয়েচে–আমি তারি মধ্যে একটুখানি কবিত্ব করে বলুম, ঠিক যেন নীল চোখের পাতার উপরে নীল স্থল্ম লাগিয়েছে । সঙ্গীর কেউ কেউ শুনতে পেলেন, কেউ কেউ বুঝতে পারলেন—কেউ কেউ ংক্ষেপে বল্লে—ই, দিব্যি দেখতে হয়েচে । তার পর থেকে দ্বিতীয়বার কবিত্ব করতে আমার উৎসাহ হল না । প্রায় মাইলথানেক গিয়ে একটা বাধের ধারে একসার তালবন এবং তালবনের কাছে একটি মেঠে ঝরনার মত আছে—সেইটে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখচি এমন সময়ে দেখি উত্তরে সেই নীল মেঘ অত্যন্ত প্রগাঢ় এবং স্ফীত হয়ে চলে আসচে এবং মধ্যে মধ্যে বিহ্ব্যদন্ত বিকাশ করচে । আমাদের সকলেরই মত হল এরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ঘরের মধ্যে বসে দেখাই সৰ্ব্বাপেক্ষা নিরাপদ, বাড়িমুখে যেমন ফিরেচি অমনি প্রকাণ্ড মাঠের উপর দীর্ঘ পদক্ষেপ করতে করতে সরোষগর্জনে একটা ঝড় আমাদের ঘাড়ের উপর এসে পড়ল । আমরা যখন প্রকৃতিমুন্দরীর চোখের স্বৰ্মার বাহার নিয়ে তারিফ করছিলুম তখন তিলমাত্র আশঙ্কা করিনি যে, তিনি রোষাবিষ্ট গৃহিণীর মত এত বড় একটা প্রকাণ্ড চপেটাঘাত নিয়ে আমাদের উপর ছুটে আসবেন । ধূলোয় এমনি অন্ধকার হয়ে এল যে পাচ হাত দুরে কিছু দেখা যায় না । বাতাসের বেঙ্গ ক্রমেই বাড়তে লাগল—কাকরগুলে। বায়ুতাড়িত হয়ে ছিটে গুলির মত আমাদের > R