পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১৭৩ ) তারা ফিরে পাঠিয়ে দেয় ; তার পরে সেই মাংস পোর্ট স্মথে পাচ ছশ টাকায় নিলেম হয়ে যায়—ভেবে দেখ দেখি —জীবের জীবনের কি ভয়ানক অপব্যয় এবং কি অল্প মূল্য! আমরা যখন একটা খানা দিই তখন কত প্রাণী কেবলমাত্র ডিশ পূরণের জন্যে আত্মবিসর্জন দেয়, হয়ত কেবল ফিরে ফিরে যায় কেউ পাতে নেয়না । যতক্ষণ তামরা অচেতনভাবে থাকি এবং অচেতনভাবে হিংসা করি ততক্ষণ আমাদের কেউ দোষ দিতে পারেন । কিন্তু যখন মনে দয়। উদ্রেক হয় তখন যদি সেই দয়াটাকে গল টিপে মেরে দশজনের সঙ্গে মিশে হিংস্র ভাবে কাজ করে যাই তাহলেই যথার্থ আপনার সমস্ত সাধুপ্রকৃতিকে অপমান করা হয় । আমিত মনে করেছি—আরো একবার নিরামিষ খাওয়া ধরে দেখব । আমার একটি নির্জনের প্ৰিয়বন্ধু জুটেছে—আমি লোকেনের ওখান থেকে তার একথান। An.iel’s Journal ধার করে এনেছি—যথনি সময় পাই সেই বইটা উণ্টে পাণ্টে দেখি—ঠিক মনে হয় তার সঙ্গে মুখোমুণী হয়ে কথা কচ্চি—এমন অন্তরঙ্গ বন্ধু আর খুব অল্প ছাপার বইয়ে পেয়েছি। অনেক বই এর চেয়ে ভাল লেখা আছে এবং এই বইয়ের অনেক দোষ থাকতে পারে কিন্তু এই বইটি আমার মনের মত । অনেক সময় আসে যখন সব বই ছুয়ে ছয়ে ফেলে দিতে হয় কোনোট ঠিক আরামের বোধ হয় না—যেমন রোগের সময় অনেক সময় বিছানায় ঠিক আরামের অবস্থাটি পাওয়া যায় না, নানারকমে পাশ ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে, কখনো বালিশের উপর বালিশ চাপাই, কখনো বালিশ ফেলে দিই, সেইরকম মানসিক অবস্থায় আমিয়েলের যেখানেই খুলি সেখানেই মাথাট ঠিক গিয়ে পড়ে শরীরটা ঠিক বিশ্রাম পায় । আমার সেই অন্তরঙ্গ বন্ধু আমিয়েল পশুদের প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতাসম্বন্ধে এক জায়গায় লিখেছে—ব—র লেখায় আমি সেইটে সমস্তটা নোট বসিয়ে দিয়েছি। কাদম্বরীর সেই মৃগয়া বর্ণনা থেকে অনেকটা আমি ব—কে তর্জমা করতে বলে দিয়েছি। পার্থীরাও যে কতকটা আমাদেরি মত—একটা জায়গায় আছে যেখানে তাতে আমাতে প্রভেদ নেই—এইটে বাণভট্ট আপন করুণ কল্পনাশক্তির দ্বারা অনুভব ও প্রকাশ করেছেন । க .ே க