পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১ ৭৯ ) একেবারে অধীর হয়ে পড়েছে এমন সময় হঠাৎ দেখলে সে আপন রাজসভায় জলের টবের মধ্যে । ফকিরের উপর খুব ক্রোধ প্রকাশ করাতে সভাসদর। সকলেই বল্লে, মহারাজ, আপনি কেবলমাত্র জলে ডুব দিয়েই মাথা তুলেছেন। আমাদের সমস্ত জীবনটা এবং জীবনের সমস্ত সুখ দুঃখ এই রকম এক মুহূৰ্ত্তের মধ্যে বম ; আমরা সেটাকে যতই সুদীর্ঘ এবং যতই সুতীব্র মনে করি যেমনি সংসারের টব থেকে মাগ তুলুব অমনি সমস্তটা মুহূৰ্ত্তকালের স্বপ্নের মত ক্ষুদ্র হয়ে যাবে। কালের ছোট বড় কিছুই নেই—আমরাই ছোট বড় । কাল দিনের বেলাটা বেশ ছিল । আমার এই নদীর জলরেখা, বালির চর এবং ওপারের বনদৃশ্যের উপরে মেঘ এবং রৌদ্রের মুহূমুহু নতুন খেলা চলছিল –গোল জানলার ভিতর দিয়ে যে দিকেই চোখ পড়ছিল এমন সুন্দর দেখাচ্ছিল । কোনো সুন্দর জিনিষকে “স্বপ্নের মত” কেন বলে ঠিক জানিনে, বোধ হয় নিছক সৌন্দর্য্যট। প্রকাশ করবার জন্যে । অর্থাৎ ওর মধ্যে যেন Realityর ভারটুকু মাত্র নেই— অর্থাৎ এই শস্যক্ষেত্র থেকে যে আহার সংগ্ৰহ করতে হয়, এই নদী দিয়ে যে পাটের নেীকে যাবার রাস্তা, এই চর যে জমিদারের সঙ্গে খাজনা দিয়ে বন্দোবস্ত করে নিতে হয় ইত্যাদি শত সহস্ৰ কথা মন থেকে দূর করে দিয়ে কেবলমাত্র হিসাবহীন বিশুদ্ধ আনন্দময় সৌন্দর্য্যের ছবি যখন আমরা উপভোগ করি তখন আমরা সেটাকে স্বপ্নের মত বলি । অন্য সময়ে আমরা জগতকে প্রধানতঃ সত্য বলে দেথি তারপরে তাকে আমরা সুন্দর অথবা অন্তরূপে জানি–কিন্তু যে সময়ে তাকে আমরা প্রধানতঃ সুন্দর হিসাবে দেখি, তারপরে সত্যহোক না হোক লক্ষ্য করিনে তখন আমরা তাকে বলি স্বপ্নের মত । க ை கண