পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ৩৩ ) পূরবীতে কিম্ব টােড়িতে সমস্ত বিশাল জগতের অন্তরের হ হ ধ্বনি যেন ব্যক্ত করচে, কারে ঘরের কথা নয় । পৃথিবীর একটা অংশ আছে, যেটা কৰ্ম্মপটু, স্নেহশীল, সীমাবদ্ধ, তার ভাবটা আমাদের মনে তেমন প্রভাব বিস্তার করবার অবসর পায়নি ; পৃথিবীর যে ভাবটা নির্জন বিরল অসীম, সেই আমাদের উদাসীন করে দিয়েছে । তাই সেতারে যখন ভৈরবীর মীড় টানে আমাদের ভারতবর্ষীয় হৃদয়ে একটা টান পড়ে। কাল সন্ধের সময় নির্জন মাঠের মধ্যে পূরবী বাজছিল, পাচ ছ ক্রোশের মধ্যে কেবল আমি একটি প্রাণী বেড়াচ্ছিলুম, এবং আর একটি প্রাণী বোটের কাছে পাগড়ি বেঁধে লাঠি হাতে অত্যন্ত সংযতভাবে দাড়িয়ে ছিল । আমার বা পাশে ছোট্ট নদীটি দুই ধারের উচু পাড়ের মধ্যে একেবেঁকে খুব অল্প দূরেই দৃষ্টিপথের বার হয়ে গেছে, জলে ঢেউয়ের রেখামাত্র ছিলনা, কেবল সন্ধ্যার আভা অত্যন্ত মুমূর্ষ, হাসির মত খানিকক্ষণের জন্যে লেগে ছিল । যেমন প্রকাণ্ড মাঠ, তেমনি প্রকাণ্ড নিস্তব্ধত ; কেবল একরকম পার্থী আছে তার মাটিতে বাস করে থাকে, সেই পার্থী, যত অন্ধকার হয়ে আসতে লগিল তত আমাকে তার নিরালা বাসার কাছে ক্রমিক আনাগোনা করতে দেখে ব্যাকুল সন্দেহের স্বরে ট ট করে ডাকৃতে লাগল। ক্রমে এখানকার কৃষ্ণপক্ষের চাদের আলে৷ ঈষত ফুটে উঠুল বরাবর নদীর ধারে ধারে মাঠের প্রান্ত দিয়ে একটা সঙ্কীর্ণ পথচিহ্ল চলে গেছে, সেইখানে নতশিরে চলুতে চলুতে ভাবৃছিলুম। இ. பகம்-ம்க C