পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ
৮৩

ও প্রমোদ ছাড়া অরণ্যে নীরজাকে কেহই দেখে নাই—তুমি যদি দোষী হও তবে প্রমোদ দোষী, অন্য কারো তাকে হরণ করা ত সম্ভব নয়।” যামিনীনাথ এই কথায় থামিয়া থামিয়া হাত রগড়াতে রগড়াইতে বলিলেন “প্রমোদ! না না মহাশয় সে কি? সে কখনই না—কিন্তু প্রমোদ—প্রমোদ—না; আমার যে বিশ্বাস—উঃ তাও কি হতে পারে? কিন্তু—জগদীশ্বর! তুমিই জান—মানুষের মন।”

 যামিনীনাথের কথার ভাবে বোধ হইল তিনি যেন ইহার কিছু জানেন, কিন্তু বলিতে অনিচ্ছুক। সন্ন্যাসী ইহাতে আর কিছু জিজ্ঞাসা না করিয়া কন্যাকে দেখিতে চাহিলেন। যামিনী নীরজাকে অন্তঃপুর হইতে এইখানে আনিয়া দিয়া অন্য গৃহে গিয়া বসিলেন। এতদিন পরে পিতা কন্যার সাক্ষাতে তাহাদের মনের ভাব কি হইল, তাহাদের কি কথা বার্ত্তা হইল তাহা অনুভবের বিষয়, বর্ণনীয় নহে।


অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ

সাধু না চোর?

 নীরজার সহিত কথা কহিবার পর যামিনীকে সন্ন্যাসীর নির্দ্দোষী মনে হইল; তিনি শুনিলেন যে রাত্রে নীরজা অপহৃত হয়, সে রাত্রে যামিনীনাথ কানপুরেই ছিলেন না।

 “কিন্তু যদি যামিনীনাথ নির্দ্দোষী তবে দোষী কে? প্রমোদ? যামিনীনাথের কথার ভাবে মনে হয় যেন প্রমোদ ইহার মধ্যে আছেন। অথচ নীরজার কথা মতে প্রমোদও সম্পূর্ণ নিরপরাধ। কিন্তু তাহা তো হইতেই পারে না; এই দুই জনের মধ্যে এক জন তো নিশ্চয়ই দোষী