পাতা:ছোট কাকী ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাড়ী দিয়াছিলেন, রামচরণের বিবাহও তিনি দিয়া যান। কিন্তু হতভাগ্যের গাৰ্হস্থ্যসুখ স্থায়ী হইল না । রামচরণের হস্তে তাহার পত্নী মুক্তকেশী একটী পুত্রসন্তান উপহার দিয়া বিধাতার আহবানে পৃথিবী ছাড়িয়া চলিয়া গেল। মাতৃহীন শিশুকেও বঁাচাইতে পারা গেল না। রামচরণ অশ্রু মুছিয়া আমার পিতামহের কাছে আসিয়া বলিল, “জেঠা মহাশয় । সংসারধৰ্ম্ম সব শেষ করে’ এসেছি ; এই ঘরের চাবি নেন, আমার আর বাড়ীঘরের দরকার নেই, বৈঠকখানার এক কোণেই পড়ে থাকবো।” পিতামহ কথাটা বুঝিলেন, দাসদাসীর বেদনাবোধের শক্তি নষ্ট করিবার মত বিদ্যাবুদ্ধি তাহার ছিল না । তিনি বলিলেন, “কি বলবো বাবা ! তোকে সংসারী করবার জন্য আমরা যথাসাধ্য করেছি।” শোক কিঞ্চিৎ পুরাতন হইলে, তাহার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী পরামর্শ দিয়াছিল, আর একটি দারপরিগ্ৰহ করিলে তাহার সংসারধৰ্ম্ম পুনর্বার বজায় হইতে পারে। রামচরণ সে কথার কোনও উত্তর দিত না, সে আমার ভগিনী সুরবালাকে কোলের মধ্যে টানিয়া লইয়া বলিত, “এদের নিয়েই আমার সংসার ।” আমি সুতিকাগৃহ হইতে বাহির হইলে রামচরণই আমাকে কোলে তুলিয়া লয় ; সংসারে আসিয়া মাতৃক্রোড় হইতে সর্বপ্রথম তাহার ক্রোড়েই আশ্ৰয় লাভ করি। মা আমার স্বৰ্গে গিয়াছেন । এখনও কত সময় রামচরণের মেহের কোলে মাথা ঠুয়াখিয়া দগ্ধজীবন শান্ত করি । রামচরণের নিকট আমি এখনও খোকা बांबू ।