কিনা, ঢের টাকা লাভ হয়েছে এবছর,—আমার জন্যেই তো সব? তাই আমাকে এটা বোনাস দিয়েছেন।
এত টাকা! হাজার! আনন্দে শ্যামার নাচিতে ইচ্ছা হইতেছিল। সে বলিল, বাবু তো লোক বড় ভাল?—হ্যাঁগা, কাল বড্ড রেগেছিলে না? বড় মেরেছিলে বাবু, কাল—পাষাণের মত। ভাগ্যে কেউ টের পায় নি, নইলে কি ভাবত?—আপিস যাবে নাকি আবার?
যাই, কাজ পড়ে আছে। সাবধানে রেখো টাকা।
এই বলিয়া সেই যে শীতল গেল, আর আসিল না। দুদিন পরে মামা বনগাঁ হইতে একা ফিরিয়া আসিল।
বুকু কই মামা?—শ্যামা জিজ্ঞাসা করিল।
মামা বলিল, কেন, শীতলের সঙ্গে আসে নি? শীতল যে তাকে নিয়ে এল?
তখন সমস্ত বুঝিতে পারিয়া শ্যামা কপাল চাপড়াইয়া বলিল, আমার সর্বনাশ হয়েছে মামা।
কে জানিত পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে চারটি সন্তানের জননী শ্যামার জীবনে এমন নাটকীয় ব্যাপার ঘটিবে?
পাঁচ
বকুলকে সঙ্গে করিয়া শীতল চলিয়া গিয়াছে।
ফিরিয়া যদি সে না আসে, এ শাস্তি শ্যামা সত্যই জীবনে কখনো ভুলিবে না।
মামা বলিল, অত ভাবছিস কেন বল দিকি শ্যামা, রাগের মাথায় গেছে, রাগ পড়লে ফিরে আসবে। সংসারী মানুষ চাকরি-বাকরি ছেড়ে যাবে কোথা? আর ও-মেয়ে সামলানো কি তার কম্মো? দু’দিনে হয়রাণ হয়ে ফিরতে পথ পাবে না।