জন্ম ও মৃত্যু
৭৬
মুখুয্যে মশায় তাঁর প্রতিনিধি রেখে গিয়েছিলেন তাঁর আট বৎসরের মেয়ে কুমীকে। পিতার দুর্লভ বাক-প্রতিভার অধিকারিণী হয়েছিল মেয়ে। এমন কি তার বয়েস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই সন্দেহ করলেন যে, মেয়ে তার বাপকে ছাড়িয়ে না যায়।
সেই কুমীর বয়েস এখন তেরো চোদ্দ। সুশ্রী, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, কোঁকড়া কোঁকড়া একরাশ চুল মাথায়, বড় বড় চোখ, মিষ্টি গলার সুর, একহারা গড়ন, কথায় কথায় খিল-খিল হাসি, মুখে বকুনির খই ফুটছে দিন-রাত।
শুভক্ষণে দু’জনের দেখা হ’ল।
হীরেন সকালবেলা পিসিমার ঘরের দাওয়ায় বসিয়া প্রাণায়াম অভ্যাস করবার চেষ্টা করচে, এমন সময়ে পিসিমা আপন মনে বললেন—দুধ কি আজ দিয়ে যাবে না? বেলা যে তেতপ্পর হ’ল—ছেলেটা যে না খেয়ে শুকিয়ে বসে আছে, একটু চা করে দেব তার দুধ নেই—আগে জানলে রাত্রের বাসী দুধ রেখে দিতাম যে—
—রাতের বাসী দুধ রোজ রাখো কি না—
বলতে বলতে একটি কিশোরী একঘটি দুধ-হাতে বাড়ির পেয়ারা গাছটার তলায় এসে দাঁড়াল।
পিসিমা বললেন—দুধের ঘটিটা রান্নাঘর থেকে বের ক’রে নিয়ে আয় দিকি, এনে দুধটা ঢেলে দে—
কিশোরী চঞ্চল লঘুপদে রান্নাঘরের মধ্যে ঢুকল এবং দুধ ঢেলে যথাস্থানে রেখে এসে আমতলায় দাঁড়িয়ে হাসিমুখে বললে—শোনো ও পিসি, কাল কি হয়েছে জানো?—হি-হি—
পিসিমা বললেন—কি?