বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গঠনমূলক স্বদেশ সেবা
৯৩

তিনি ভাঙ্গিয়া পড়েন নাই। অতুলবাবু প্রভৃতি অন্তরীণ হইবার পর অতুলবাবুর পত্নীকে রবীন্দ্রনাথ নিম্নলিখিত পত্র লিখিয়াছিলেন,—

“কল্যাণীয়াষু,

 তোমার স্বামীর অন্তরীণ সংবাদ আমি পূর্বেই শুনিয়াছি। কি কারণে এই বিপত্তি ঘটিল তাহা কিছুই জানি না। এ সম্বন্ধে রাজপুরুষদের নিকট আমি পত্র লিখিয়াছি। তাহার কোন ফল হইবে কিনা বলা যায় না। তোমরা যে দুঃখ ভোগ করিতেছ, ভগবান তোমাদের সেই দুঃখকে কল্যাণে পরিণত করুন। এই কামনা করা ছাড়া আর আমাদের কিছু করিবার নাই।”

 এইরূপে কবির সকল উদ্যম আয়োজন ব্যর্থ হইল, কিন্তু ইহাতে তিনি নিরাশ ও ভগ্নোৎসাহ হইলেন না। শান্তিনিকেতন বিশেষ করিয়া শ্রীনিকেতনের মধ্য দিয়া তিনি তাঁহার পল্লীসংগঠন নীরব কর্মসাধনার আদর্শ বাস্তবে পরিণত করিতে দ্বিগুণ উৎসাহে প্রবৃত্ত হইলেন। বলিতে গেলে, ১৯১৬ সাল হইতে আরম্ভ করিয়া জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতন লইয়াই ছিলেন। গ্রামের স্বাস্থ্যসংস্কার, পল্লীশিল্পের পুনরুদ্ধার ও প্রসার, লোকশিক্ষা বিস্তার, সমবায় সমিতি গঠন—এই সবই ছিল শ্রীনিকেতনের লক্ষ্য। আমার স্বর্গীয় বন্ধু কালীমোহন ঘোষ শ্রীনিকেতনের কর্ণধার এবং এই সব কাজে রবীন্দ্রনাথের দক্ষিণ-হস্তস্বরূপ ছিলেন।