৬
গঠনমূলক স্বদেশ সেবা
১৯০৮ সালে পাবনায় বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের সভাপতিরূপে রবীন্দ্রনাথ যে অভিভাষণ দেন, একাধিক কারণে তাহার বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য। ইতিপূর্বে যাঁহারা ঐ সম্মেলনের সভাপতি হইয়াছিলেন, তাঁহারা সকলেই ইংরেজী ভাষায় বক্তৃতা করেন। বাঙলার রাষ্ট্রক্ষেত্রে বাঙালীর মাতৃভাষা তখনও ‘জাতে উঠে নাই’। ইহা আজিকার দিনে অদ্ভুত শুনাইলেও দুর্ভাগ্যক্রমে ঐরূপই ঘটিয়াছিল। রবীন্দ্রনাথই প্রথম রাষ্ট্র সম্মেলনে বাঙলা ভাষায় সভাপতির বক্তৃতা করেন। সেই হইতেই রাজনৈতিক আন্দোলনে বাঙলা ভাষা তাহার নিজস্ব স্থান অধিকার করিয়াছে বলিলে অত্যুক্তি হয় না।
দ্বিতীয়ত, এই সময় হইতেই জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পূর্ণরূপে বদলাইয়া গেল। স্বদেশী আন্দোলনের পূর্বে ১৯০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ “স্বদেশী সমাজ” নামক যে বক্তৃতা করেন, তাহার কথা পূর্বেই বলিয়াছি। এই বক্তৃতার মধ্যেই তাঁহার এই নূতন দৃষ্টিভঙ্গীর সূচনা ছিল। স্বদেশী আন্দোলনের প্রবল আলোড়নের সঙ্গে যোগ দিলেও কবি তাঁহার স্বদেশ সেবায় ঐ নিজস্ব ভাব ও আদর্শ