বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় সাহিত্যের ভবিষ্যৎ
১৩

পরিবারের মত ভারতবাসীরা,—হিন্দুমুসলমান, পার্শি-খৃষ্টান,—সকলে সর্ব্ববিধ মনোমালিন্য ভুলিয়া, জাতিভেদ ভুলিয়া, বীণাপাণির মন্দিরে সমবেত হইয়া, পাশাপাশি দাঁড়াইয়া মায়ের পদে,

সকলবিভবসিদ্ধ্যৈ পাতু বাগ্‌দেবতা নঃ[১]

বলিয়া পুষ্পাঞ্জলি সমর্পণ করিতেছে! বাঙ্গালার

হৃদিবৃন্দাবনে বাস যদি কর কমলাপতি,
ওহে ভক্তপ্রিয়া আমার ভক্তি হবে রাধা সতী।
[২]

সঙ্গীত আমি যেন শুনিতে পাইতেছি,—ঐ শুনুন,—ভারতের অপর প্রান্তে,—সুদূর মহারাষ্ট্রদেশে প্রতিধ্বনিত হইতেছে; বাঙ্গালার শ্যামার ঔদাস্যপূর্ণ সঙ্গীত ঐ যেন রামেশ্বরের সিন্ধুতীরে মূর্চ্ছিত হইতেছে! আবার ঐ শুনুন,—মহারাষ্ট্রের মধুর গীতলহরী বাঙ্গালাভাষার মধ্য দিয়া আসিয়া বঙ্গের প্রতিপল্লী মাতাইয়া তুলিতেছে। আমি যেন দেখিতে পাইতেছি, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের জনসাধারণের মধ্যে স্ব স্ব দেশের ভাষার যে ব্যবধান বা প্রাচীর ছিল, যাহার জন্য বাঙ্গালী কৃষক বা পল্লীবাসী উৎকলের বা দ্রাবিড়ের পল্লী-সঙ্গীত বুঝিতে পারিত না, পরস্পরের ভাবের বিনিময়—সুতরাং প্রাণের বিনিময়—করিতে পারিত না, সেই ব্যবধান-প্রাচীর যেন ধূলিসাৎ হইয়াছে। এখন আর “পর পর” ভাব নাই, সব এক হইয়া গিয়াছে।