বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৭৫

“গম্ভীরে বাজায়ে বীণা গাইল—কেমনে
নাশিলা সুমিত্রাসুত লঙ্কার সমরে,
দেব-দৈত্য-নরাতঙ্ক রক্ষেন্দ্র-নন্দনে;”

কখন বা—

“কল্পনা-দূতীর সাথে ভ্রমি ব্রজধামে,”

“গোপিনীর হাহাকার ধ্বনি” শুনিতেন, ও সেই “বিরহে বিহ্বলা বালার” করুণ কণ্ঠে কণ্ঠ মিশাইয়া বিদ্যাপতি চণ্ডীদাসের বীণায় বিরহ-সঙ্গীতের আলাপ করিতেন। কত সাগর মহাসাগর পার হইয়া দেশ-বিদেশে তিনি ঘুরিয়াছিলেন, কিন্তু ভারতের প্রতি তাঁহার কেমনই একটা আকর্ষণ ছিল যে, তিনি উদ্দাম যৌবনেও ডুব দিলেন “ ভারত-সাগরে ”— অন্য সাগরে নহে; পাশ্চাত্য কবিকুলের প্রতি প্রগাঢ় শ্রদ্ধাসম্পন্ন হইয়াও তিনি তিলার্দ্ধের জন্য প্রাচ্য কবিকুলের সেবা করিতে বিস্মৃত হন নাই। “কবিগুরু বাল্মীকির প্রসাদ” পাথেয় লইয়া তিনি দুর্গম কবিত্ব-কাননে প্রবেশ করিয়াছিলেন।[১]

 তাঁহার কবি-জীবনের দুইটি স্তর আমরা দেখিতে পাই। প্রথমটি কবির ইউরোপ-গমনের পূর্ব্ব কাল, দ্বিতীয়টি ইউরোপ-যাত্রা হইতে তাহার পরবর্ত্তী কাল। তাঁহার যে সমুদয় কাব্য-রত্নাবলীতে বঙ্গবাণী অলঙ্কৃত, সেগুলি ঐ পূর্ব্ব কালে গ্রথিত, আর হেক্টর-বধ, মায়াকানন এবং