পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
জাপান-যাত্রী

বিকৃত য়ুরোপকেই কেবল দেখি। জাপানকে, যদি দেখতে পেতুম, তাহলে আমাদের ঘর থেকে অনেক কুশ্রীতা, অশুচিতা অব্যবস্থা, অসংয়ম আজ দূরে চলে যেত।

 বাঙলা দেশে আজ শিল্পকলার নূতন অভ্যুদয় হয়েচে, আমি সেই শিল্পীদের জাপানে আহ্বান করচি। নকল করবার জন্যে নয়, শিক্ষা করবার জন্যে। শিল্প জিনিষটা যে কত বড় জিনিষ, সমস্ত জাতির সেটা যে কত বড় সম্পদ, কেবলমাত্র সৌখিনতাকে সে যে কতদূর পর্য্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে― তার মধ্যে জ্ঞানীর জ্ঞান, ভক্তের ভক্তি, রসিকের রসবোধ যে কত গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে আপনাকে প্রকাশ করবার চেষ্টা করেচে, তা এখানে এলে তবে স্পষ্ট বোঝা যায়।

 টোকিয়োতে আমি যে শিল্পীবন্ধুর বাড়ীতে ছিলুম, সেই টাইক্কানের নাম পূর্ব্বেই বলেছি, ছেলেমানুষের মত তাঁর সরলতা; তাঁর হাসি, তাঁর চারিদিককে হাসিয়ে রেখে দিয়েছে। প্রসন্ন তাঁর মুখ, উদার তাঁর হৃদয়, মধুর তাঁর স্বভাব। যত দিন তাঁর বাড়িতে ছিলুম, আমি জান্‌তেই পারি নি তিনি কত বড় শিল্পী। ইতিমধ্যে য়োকোহামায় একজন ধনী এবং রসজ্ঞ ব্যক্তির আমরা আতিথ্য লাভ করেচি। তাঁর এই বাগানটি নন্দনবনের মত এবং তিনিও সকল বিষয়ে এখানকারই যোগ্য। তাঁর নাম “হারা”। তাঁর কাছে শুনলুম, য়োকোহামায় টাইক্কান এবং তানজান শিমোমুরা আধুনিক জাপানের দুই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ শিল্পী। তাঁরা আধুনিক যুরোপের নকল করেন না, প্রাচীন জাপানেরও