পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
২৫

করলেই তফাৎটা স্পষ্ট দেখ্‌তে পাওয়া যাবে। ভেনিসে সৌন্দর্য্যে এবং ঐশ্বর্য্যে মানুষ আপনারই পরিচয় দিয়েচে, ম্যাঞ্চেষ্টরে মানুষ সব দিকে আপনাকে খর্ব্ব করে আপনার কলের পরিচয় দিয়েচে। এই জন্য কল-বাহন বাণিজ্য যেখানেই গেছে সেখানেই আপনার কালিমায় কদর্য্যতায় নির্ম্মমতায় একটা লােলুপতার মহামারী সমস্ত পৃথিবীতে বিস্তীর্ণ করে দিচ্চে। তাই নিয়ে কাটাকাটি হানাহানির আর অন্ত নেই; তাই নিয়ে অসত্যে লোকালয় কলঙ্কিত এবং রক্তপাতে ধরাতল পঙ্কিল হয়ে উঠল। অন্নপূর্ণা আজ হয়েচেন কালী; তাঁর অন্ন পরিবেষণের হাতা আজ হয়েচে রক্তপান করবার খর্পর। তাঁর স্মিতহাস্য আজ অট্টহাস্যে ভীষণ হল। যাই হোক্, আমার বলবার কথা এই যে, বাণিজ্য মানুষকে প্রকাশ করে না, মানুষকে প্রচ্ছন্ন করে।

 তাই বল্‌চি, রেঙ্গুন ত দেখলুম কিন্তু সে কেবল চোখের দেখা, সে দেখার মধ্যে কোন পরিচয় নেই;―সেখান থেকে আমার বাঙালী বন্ধুদের আতিথ্যের স্মৃতি নিয়ে এসেছি, কিন্তু ব্রহ্মদেশের হাত থেকে কোনো দক্ষিণা আন্‌তে পারি নি। কথাটা হয়ত একটু অত্যুক্তি হয়ে পড়ল। আধুনিকতার এই প্রাচীরের মধ্যে দেশের একটা গবাক্ষ হঠাৎ একটু খােলা পেয়েছিলুম। সােমবার দিনে সকালে আমার বন্ধুরা এখানকার বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দিরে নিয়ে গেলেন।

 এতক্ষণে একটা কিছু দেখতে পেলুম। এতক্ষণ যার মধ্যে ছিলুম সে একটা এব্‌স্‌ট্রাক্‌শন সে একটা আচ্ছিন্ন পদার্থ। সে