সৌন্দৰ্য্য-তত্ত্ব 8S) জিনিষ আছে, যাহার উপভোগে কেবল তৃপ্তিমাত্র, সুখমাত্র ; ফলাফল চিন্তা, ইউটিলিটি চিস্তা, ভবিষ্যৎ চিন্তা, জীবনমরণ চিন্ত যাহাকে কলুষিত করে না ; যাহা বিশুদ্ধ নিরপেক্ষ নিৰ্ম্মল উদ্দেশ্যহীন মুখের উৎপাদক বই আর কিছুই নহে । স্বতরাং প্রাকৃতিক নিৰ্ব্বাচনে কিরূপে এই অনাবশুক মুখভোগ-প্রবৃত্তির উৎপত্তি হইল, তাহ সমস্তাই থাকিয়া যায় । মনোবিজ্ঞানের কাছে সদুত্তর মিলে না । আমার বিবেচনায় প্রকৃতিক নির্বাচনকে আর একটু চাপিয়া ধরিলে কতকটা পরিষ্কার হইতে পারে । প্রকৃতি এক ভাবে আমার বিরুদ্ধে ও সমাজের বিরুদ্ধে খড়গহস্তে দণ্ডায়মান,–নিৰ্ম্মম, নিষ্ঠুর, দয়ালেশবিবর্জিত ; আবার প্রকৃতি তাদ্য ভাবে আমাকে ও সমাজকে সেই খড়গাঘাত হঠতে বাচাইবার জন্ত ব্যাকুলা । কেন এমন, তাহ বলা যায় না ; কিন্তু ইহা সত্য, ইহা মানিতে হয়, না মানিলে চলিবে না । ইহাতেই আমার নিজত্বের, আর ইহাতেই সমাজের অভিব্যক্তি । ইহার ফলেই আমি সেই খড়গাঘাত হইতে দূরে থাকিতে ক্রমশঃ শিখিতেছি ; গ্রকৃতির নিষ্ঠুর আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষার জন্য ক্রমেই আমার জ্ঞানবিকাশ, বুদ্ধবিকাশ, ধৰ্ম্মবিকাশ, ঘটিতেছে । আমার অনুভূতি ক্রমেই তীক্ষ হইতে তীক্ষুতর হইতেছে । অনুভূতি, অর্থাৎ দুঃখের অনুভূতি । দুঃখের অনুভূতি অর্থাৎ প্রকৃতি হস্তে খঙ্গাঘাতের আশঙ্কা । এই অনুভূতি যাহার তীক্ষু নহে, খড়গপাতের আশঙ্ক যাহার মোটেই নাই, সে জীবনসমরে আত্মরক্ষায় সমর্থ নহে, তাহার জীবনের ভরসা নাই । শঙ্কার হেতু যাহকে বেষ্টন করিয়া আছে, তাহার নিঃশঙ্ক ভাব মঙ্গলপ্রদ নহে। যাহার এই আশঙ্কা প্রবল, এই অনুভূতি প্রবল, তাহারই মোটের উপর জীবনের ভরসা অধিক । সেই ব্যক্তি সংগ্রামে কিছুদিন বাচিতে পারবে" সম্মুখ যুদ্ধে দাড়াইতে পরিবে বলা যায় না ; ভয়াকুল মুগের ন্যায়, শঙ্কামাত্রসম্বল শশকের দ্যায়, শক্র হইতে
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৫২
অবয়ব