পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সূর্যকিরণ চকিতে নিভায়ে সাজিয়াছে নিশাচর, কালনাগিনীর ফণার মতন নাচে সে বুকের পর । চক্ষে তাহার কালকূট ঝরে,--বিষপঙ্কিল শ্বাস, সারাটি জীবন মরীচিকা তার,—প্রহসন-পরিহাস । ছোয়াচে তাহার স্নান হ’য়ে যায় শশীতারকার শিখ, আলোকের পরে নেমে আসে তার আঁধারের যবনিক ! সে যে মন্বন্তর,—মৃত্যুর দৃত,—অপঘাত, -মহামারী,— মানুষ তবু সে,– তার চেয়ে বড়,--সে যে নারী, সে যে নারী ! ভালুকী মালঞ্চে পুম্পিত লতা অবনতমুখী,— নিদাঘের রৌদ্রতাপে এক সে ডাহুকী বিজন-তরুর শাখে ডাকে ধীরে ধীরে বনচ্ছায়া-অন্তরালে তরল তিমিরে । --আকাশে মন্থর মেঘ, নিরালা দুপুর । - নিস্তব্ধ পল্লীর পথে কুহকের সুর বাজিয়া উঠিছে অণজ ক্ষণে ক্ষণে ক্ষণে । সে কোন পিপাসা কোন ব্যথা তার মনে । হারায়েছে প্রিয়ারে কি ?– তৃসীম আকাশে ঘুরেছে অনন্ত কাল মরীচিকা-আশে ? বাঞ্ছিত দেয় নি দেখা নিমেষের তরে ! — কবে কোন কক্ষ কাল-বৈশাখীর ঝড়ে ভেঙে গেছে নীড়, গেছে নিরুদেশে ভাসি’ ! —নিঝুম বনের তটে বিমনা উদাসী গেয়ে যায় ; সুপ্ত পল্লী-তটিনীর তীরে ডাহুকীর প্রতিধ্বনি-ব্যথা যায় ফিরে । —পল্লবে নিস্তব্ধ পিক,—নীরব পাপিয়া, গাহে এক নিদ্রণ হার বিরহিণী হিয়া ! SOమ