পাতা:জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা.djvu/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।


নিজের নুড়ির ’পরে সারাদিন নদী
সূর্যের— সুরের বীথি, তবু
নিমেষে উপল নেই— জলও কোন্ অতীতে মরেছে;
তবুও নবীন নুড়ি— নতুন উজ্জ্বল জল নিয়ে আসে নদী;
জানি আমি জানি আদি নারী শরীরিণীকে স্মৃতির
(আজকে হেমন্ত ভোরে) সে কবের আঁধার অবধি;
সৃষ্টির ভীষণ অমা ক্ষমাহীনতায়
মানবের হৃদয়ের ভাঙা নীলিমায়
বকুলের বনে-মনে অপার রক্তের ঢলে গ্লেশিয়ারে জলে
অসতী না হ’য়ে তবু স্মরণীর অনন্ত উপলে
প্রিয়াকে পীড়ন ক’রে কোথায় নভের দিকে চলে।


সূর্যতামসী

কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর;
কোথাও ভোরের বেলা র’য়ে গেছে— তবে।
অগণন মানুষের মৃত্যু হ’লে— অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন্ সিন্ধুর স্বর:
মরণের— জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।
একটি রাত্রির ব্যথা স’য়ে—
সময় কি অবশেষে এ-রকম ভোরবেলা হ’য়ে
আগামী রাতের কালপুরুষের শস্য বুকে ক’রে জেগে ওঠে।
কোথাও ডানার শব্দ শুনি;
কোনো দিকে সমুদ্রের সুর—
দক্ষিণের দিকে,

১০৭