বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা.djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাই তা’রা চলে যায় শাদা, নিঃসহায়।
মূল সারসের সাথে হ’লো মুখ দেখা।


রাত্রির সংকেতে নদী যতদূর ভেসে যায়— আপনার অভিজ্ঞান নিয়ে
আমারো নৌকার বাতি জ্বলে;
মনে হয় এইখানে লোকশ্রুত আমলকী পেয়ে গেছি
আমার নিবিষ্ট করতলে;
সব কেরোসিন-অগ্নি ম’রে গেছে; জলের ভিতরে আভা দ’হে যায়
মায়াবীর মতো জাদুবলে।
পৃথিবীর সৈনিকেরা ঘুমায়েছে বিম্বিসার রাজার ইঙ্গিতে
ঢের দূর ভূমিকার পর;
সত্য সারাংসার মূর্তি সোনার বৃষের ’পরে ছুটে সারাদিন
হ’য়ে গেছে এখন পাথর;
যে-সব যুবারা সিংহীগর্ভে জ’ন্মে পেয়েছিলো কৌটিল্যের সংযম
তারাও মরেছে— আপামর।
যেন সব নিশিডাকে চ’লে গেছে নগরীকে শূন্য ক’রে দিয়ে—
সব ক্বাথ বাথরুমে ফেলে;
গভীর নিসর্গ সাড়া দিয়ে শ্রুতি বিস্মৃতির নিস্তব্ধতা ভেঙে দিতো তবু
একটি মানুষ কাছে পেলে;
যে-মুকুর পারদের ব্যবহার জানে শুধু, যেই দীপ প্যারাফিন,
বাটা মাছ ভাজে যেই তেলে,
সম্রাটের সৈনিকেরা যে-সব লাবণি, লবণরাশি খাবে জেগে উঠে’,
অমায়িক কুটুম্বিনী জানে;
তবুও মানুষ তার বিছানায় মাঝরাতে নৃমুণ্ডের হেঁয়ালিকে
আঘাত করিবে কোন্‌খানে?
হয়তো নিসর্গ এসে একদিন ব’লে দেবে কোনো এক সম্রাজ্ঞীকে
জলের ভিতরে এই অগ্নির মানে।

৮৭