পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাছে অপরিচিত থেকেই আমরা দু জনে বিয়ে করেছিলাম। অালাপ-পরিচয়ের মধ্যে প্রেমের ভিতর দিয়ে যদি বিয়ে হত অামাদের তা হলে চার বছর পরে প্ৰেমের এই হার কখনো দেখে কী ভাবতাম বলো তো দেখি নিজেই উত্তর দিল অঞ্জলি, বললে, ‘জীবনে অনেক জিনিশকে অবজ্ঞা করতে শিখেছি—কিন্তু তবুও প্রেমের ওপর বিশ্বাস রয়েছে এখনও । যদি কাউকে ভালবেসে জীবনে গ্ৰহণ করবার সুযোগ পেতাম, তা হলে দু-পয়সার জৰ্দার জন্য এক বেচারির পরজন্মের অভিশাপের কথা পা তে বাস্তবিক বডড কষ্ট বোধ করতাম অামি অামার দিকে তাকিয়ে —“অালোটা জ্বালা ও ‘দেশলাইটা কোথায় ?” দেখো না। অামার বালিশের নীচে অাছে না কি—" বালিশের নীচের থেকে নিজেই কী বের করে দিয়ে — দেখো তো হারিকেনে তেল ৩রা অাছে না কি ?” দু-একবার বাকুনি দিয়ে – ‘অাছে— ‘কোথায় রাখব ?” “যেখানে অ’ ছে সেখানেই থাক—--” ‘উশকে দেব ?” ‘না, কমানোই থাক-পানের বাটাটা অামাকে দাও তো দিলাম । একটা । পান ছিডতে-ছি ৬তে অঞ্জলি—‘না, মানুষের হৃদয়ের স্নেহ সহানুভূতির বেদনার বন্ধন ও হারাই নি আমি । ‘দ্য টুকরো শুপুরি দাও দেখি – জাতি দিয়ে একটা শুপুরি চার ভাগ করে কেটে, দু খণ্ড অামার দিকে ৬ে দিল অঞ্জলি । বললে—‘এই যে তুমি অন্ধকারের মধ্যে দাড়িয়ে আছো, তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে দুঃখ করে অামার—এ কোনো বানানো দুঃখ নয় ; বুঝাবার ভুল নয় ; খাটি জিনিশ । তুমি মরে গেলে কপালের মুছবার নিয়ম সিমুর অামার, বিধবার থান পরতে হবে -তাতে যত না দুঃখ হবে, তুমি বেঁচে থাকতে তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে এক-এক সময় তার চেয়ে ঢের বেশি বিচ্ছেদ ও কষ্ট অনুভব করি আমি— ওটা কী ডাকছে গো ?” পেচা