পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—আমি ভাবি কি, যাদের কাছে জিনিশ বেচে তোমার এত পড়তা তাদের কাছে আমরা ঢের ঋণী।" —“তুমি তো এই কথা বলছ শুনতে ভারি সুন্দর তোমার কথা, ব্যাপারটাকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নানাভাবেই দেখা যায়; যদি মানুষের ব্যবসার ভিতরের খবর জানতে।' সে বাধা দিয়ে বললে—“থাক, হাজার-হাজার টাকা যে তারা আমাদের করে দহুকুন্তু স্থিল ননমা মরক্ষে লতা —মন্দ কী ?” —‘খুব সুন্দর বলো।’ —‘রুচিভেদে। সংসারে কারো কাছে সুন্দর লাগে, কারো কাছে সাধারণ বলে মনে হয়।’ —“তোমার কাছেই-বা কেমল লাগল ?’ —‘এক-একজন ছিপছিপে মেয়ে, বেশ তো ' —‘মাদ্রাজি শাড়ি পরে ? —তাই তো দেখলাম।” বললে—“আর কী বিক্রি কর ?’ —মাখন, পাউরুটি, বিস্কুট, জ্যাম। —“জ্যাম কাকে বলে ?” —ওই জেলিই।’ —‘কতদিন কুঁচি দিয়ে শাড়ি পরি নি। —"কেন ?" —না, এইসব পাড়ার লোক বড় কুচুটে। ছিচকে শাশুড়িও একটি কম নন।’ একটু চুপ থেকে—‘পায়ে আলতা দিয়েছ দেখছি। —সুন্দর দেখাচ্ছে না? ঘাড় নেড়ে—“বেশ। —‘মেহেদি পাতা ঘষে দিয়েছি।” —“তইতে। তাতে এত লাল হয় ?” —“তা হয় বইকি। —"বিকেলে তোমাকে এক শিশি আলতা কিনে দেব।' —‘থাক।” —*কেন থাকবে ?” —‘আলতা আমি বড় একটা পরি না।’ একটা নিশ্বাস ফেলে—‘যখন দরকার হয় মেহেদির জঙ্গলই তো রয়েছে। নিস্তব্ধ দুপুর, বিবি ডাকছিল। —‘বডড গ্রামোফোন শুনতে ইচ্ছে করে আমার।’ —“গ্রামোফোন ?” —“যেন আকাশ থেকে পড়লে। এতদিন পরে মাদ্রাজ থেকে এলে একটা গ্রামোফোনও তো আনতে পারতে। সে আঙুল মটকাতে-মটকাতে, আজ কাল তো খুব শস্তায় পাওয়া যায়। একশো পঞ্চাশে একটা খুব ভালো কল হয়। —“তা হয় অবিশ্যি।’ >QQ