পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানে দিনের—জীবনের স্পষ্ট বড় আলো নেই এখানে দিনের—জীবনের স্পষ্ট বড় আলো নেই ধ্যানের সনির্বন্ধ অন্ধকার এখনে আসো নি চারিদিকে ভোরের কি বিকেলের কাকজ্যোৎস্না ছায়ার ভিতরে আহত নগরীগুলো কোন এক মৃত পৃথিবীর নিহিত জিনিশ বলে মনে হয়, তবু, মৃত্যু এক শেষ শান্ত দীন পবিত্রতা আমাদের আজকের পৃথিবীর মানুষ-নগরগুলো সে রকম আন্তরিকভাবে মৃত নয় বাজারদরের চেয়ে বেশি ভালো টাকা ঘুষ দিয়ে জীবনকে পাওয়া যাবে ভেবে যেন কোন জীবনের উৎস অন্বেষণে তারা সকলে চলেছে পরস্পরের থেকে দূরে থেকে—ছিন্ন হয়ে—বিরোধিতা করে সকলের আগে নিজে—অথবা নিজের দেশ নিজের নেশন সবের উপরে সত্য মনে করে—জ্ঞানপাপে অস্পষ্ট আবেগে পৃথিবীর মানুষের সকল ঘটনা গল্প নিস্ফলতা সফলতা যদি দেশলাইয়ে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তবে আমি ও আমার দেশ আমার স্বজন ছাড়া ওরা উৎসাদিত হয়ে যাক—এই ভাব—এমনি কঠিন অপ্রীতি চারিদিকে তবুও সার্থককাম কেউ নয় আমাদের শতাব্দীর মানুষের ছোট বড় সফলতা সব মুষ্টিমেয় মানুষের যার যার নিজের জিনিশ কোটি মানুষের মাঝে সমীচীন সমতায় বিতরিত হবার তা নয় এইখানে মর্মে কীট রয়ে গেছে মানুষের রীতির ভিতরে রীতির বিধানদাতা মানুষের শোকাবহ দোষে। প্রকৃতি আবিল কিছু তবু মানুষের প্রয়োজনমতো তাতে নির্মলতা আছে আর কিছু আছে তাতে, হেন মানুষের সব প্রয়োজন সীমা শেষ করে অহেতুক অন্তহীন চকিত জিনিশ রয়ে গেছে—এক-আধজন কবি প্রেমিকের তবু এ সব জিনিশ নিয়ে প্রয়োজন—সকলের নয়। প্রকৃতি ও জীবনের তীরবাসী জ্ঞানময় মুক্ত মানুষের ১৭১