পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোটেই ভাল লাগবে না তাদের । চেহারার জন্যেই যদি মানুষকে আমল দিতে হয় তা হলে এ চেহারাকে এক ডাকে ফিরিয়ে দিতে হয়, কানে তুলতে হয় না এর কোনো কথা । খেয়ে-দেয়ে একটু ঘুমিয়ে, ওষুধ দেবার, দেখবার, শুনবার, তদারক করবার জন্যে সুমনার ঘরে এসেছিল অৰ্চনা ! ওষুধ, কমললেবু খাওয়া হয়ে গেছে সুমনার। অর্চনা বিছানার পাশে বসে নিজেকে খানিক, সুমনকে কিছু, হাওয়া খাওয়াবার জন্যে হাতপাখাটা নাড়ছিল, মাঝে-মাঝে দু-চারটে কথা বলছিল— স্বাধীনতা হল তবু সুখ হল না, শান্তি এল না, নতুন কি পলিটিকস করা যায়, শাড়ি-কাপড় পাওয়া যাচ্ছে না, খাবার জিনিস না-পাওয়ার মত, সকলেই সহজেই ভাত কাপড় স্বস্তি পেতে পারে কী করে, ঐ নিম-জাম-বকুলের পাখিগুলোর মত দেশের জল-ফলফলি খেয়ে ঘরের ছেলে ঘরে শান্তিতে কল্যাণে থাকতে পারে কী এই সুন্দর চোতের বাতাসে—কী সে টাকাকড়ির ব্যবস্থা, জননীতি, স্বাধীন দেশের সর্বভূমির জন্যে কল্যাণনীতি—এই সব নিয়ে আলোচনা করছিল তারা । যে-গাইগোরু হরিণীর মত যেন অনেকটা, অর্চনাকে তেমনি দেখাচ্ছিল । ‘কে রে বাপু, দুপুরবেলা ঘরের ভিতর, কে তুমি ! ‘আমি এসেছি, ঘুমিয়ে আছে মা ? ‘কে, হরীত নাকি ?’ অৰ্চনা তৃতীয় চক্ষু বার করবার চেষ্টা করে যেন বললে, ‘কেমন বদলে গেছে হরীত ! এ কী হয়েছে হরীত !’ সুমন শুয়ে-শুয়ে প্রায় চোখ বুজে কথা বলছিল ; চোখ মেলে উঠে বসবার চেষ্টা করে বললে, ‘কে হরীত, ও হfরীত । হারৗত এগিয়ে এসে একটা টুল টেনে নিয়ে বসে বললে, 'আমি এসেছিলাম কাল রাতে, জানো অর্চনামাসি ? ‘শুনেছি । কেপথেকে এলে ? ‘কলকাতার থেকে ৷” ‘কাল রাতেই যে ? কাল তো নিশীথবাবু কলকাতায় গেলেন—তিনি যাওয়া মাত্র তুমি এলে। কী করে এ যোগাযোগ ঘটালে হরীত । ‘মাঝে-মাঝে ঘটে যায় তো দেখছি ।’ ‘কলকাতায় ছিলে তো তুমি, না আশেপাশে কোথাও গা ঢাকা দিয়েছিলে, >Wうと)