পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই তো করেছে দাঙ্গার সময় । মরা মানুষ আধ-মরা মানুষ, ডাক্তার অণর হাসপাতাল, টেলিফোন আর ট্রাক চার্টার ; মনে কোনো বিষ নেই, বেকুকি নেই, বজাতি নেই, যারা মারছে তাদের ওপর হামলা নেই, ভয় নেই, লোভ লুট চঞ্চলত নেই, মাটিন সাহেব যে আমার শাশুড়ি এ কথা ভেবে মাঝেমাঝে আমি খুব ঝুম হয়ে থাকি, ইণ বেশ লাগে । নিশীথ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললে, ‘বেশ ভালো, মহৎ শাশুড়ি পেয়েছ তো । আমার ঘুম পাচ্ছে।’ জিতেন উঠে দাড়িয়ে বললে, ‘ঘুম পাচ্ছে ? তাহলে ঘুমোও । সাদা পাতলা চাদরটা গায়ে জড়িয়ে নিশীথ বললে, "লম্বা ফর্শ তোমার শাশুড়ি ? অ্যাংলো ইনডিয়ানের মতন দেখতে ? মা-থিন তো রেঙ্গুনের মেয়ে । অথচ মেমের মতন—’ ‘ওর বাবা খাটি বার্মিজ, রেঙ্গুনের খুব বড় ব্যারিস্টার ছিলেন । ম-থিনের মা নরওয়ের মেয়ে—’ ‘ওঃ ! নিশীথ বললে, “তোমার স্ত্রী দেখতে কেমন ? "চলো দেখবে ।” ‘এখন তো রাত দুটো ।” "চলো ওপরে ৷ পাচটার সময় অফিসে যেতে হবে । এ তিনঘণ্টা জেগেই কাটিয়ে দিই। চলে, আমার স্ত্রী বাংলা বলতে পারে খাটি বাঙালি গিন্নির মতন, তোমার বাংলা লেখাটাও পড়েছে, পেলিটিকসেই উৎসাহ বেশি, তবে—’ জিতেনের ঠোঁট গাল চোয়াল একটু বেঁকে কুচকে স্বাভাবিক হয়ে আসতেই সে বললে, “সাহিত্যেও নজর আগছে নমিতার—’ 'নমিতার ?’ 'নমিতার। চলে যাই, তুমি সিগারেট খাও ? ‘এক-আধটা, দলে পড়লে ।” ‘আমারও তাই । ওপরে টিন অণছে । শবদ শুনছ ?’ ‘কোথায় ?” জিতেন দাশগুপ্ত তার একহারা লম্বা কালো শরীরটা কেমন একটা উৎসাহের দুর্দমনীয়তায় আড়ষ্ট কঠিন করে চশমার ফঁাক দিয়ে সিলিঙের দিকে চোখ মেরে বললে, “ঐ ঐ টক টক ডুক ডুক চক চক—’ wo