পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“আমার ভাঙা শরীরটাকে একটু তালি মেরে ঠিক করে দেবে তুমি ? হারাত বললে, 'জলপাইহাটিতে ছোটখাট নানা রকম কাজে আমাকে সাহায্য করবে— টাকার সাহায্য চাই না, পরামর্শ দেবে তুমি । যদি বল আমাকে, তা হলে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে থাকব আমি—তুমি বলছ থাকব— কেন দরকার তা জিজ্ঞেস করব না—এই সব স্থিরতা ।” হারীতকে নিয়ে নিজের অন্ধকার ঘরে যেতে চেয়েছিল অর্চনা । বোকার মতন চেয়ারে বসে থেকে বেকুবের মত কথা বলছে হরীত । সমস্ত মন গ্লানিতে ভরে গেল অৰ্চনার ; উঠে চলে যেতে ইচ্ছা করছিল ; কিন্তু চুম্বকে আটকে আছে যেন তার প্রকৃতির দৃঢ় মিহি সব স্নায়ু এই ঘরেরও অন্ধকারের ভেতর । কিন্তু যেআলো এসেছিল, অগস্তে-আগস্তে কেটে যেতে লাগল, মনের অস্তিত্ব ফিরে পেতেপেতে আর-এক রকম ভাবে ভাল লাগল তার । নিস্তার অনুভব করে, শান্তি অনুভব করে, তবুও সৃষ্টির অন্ধকারের অন্তলীন সোমরসের দিকে আর-এক বার তাকিয়ে অর্চনা বললে, ‘কে জানবে আমাদের সম্বন্ধের কথা ? ‘কাউকে জানাবার দরকার নেই। নিশীথবাবুকে জানাতে চাও অৰ্চনা ? *র্তাকে চিঠি লিখে দেব ? ‘সেটা দরকার মনে কর ? ঘরের ভেতর ইtটতে-ইtটতে হরীত বলল । অৰ্চনা কিছু ক্ষণ সুমনার দিকে তাকিয়ে রইল। কী রকম অকাতরে ঘুমুচ্ছে । কী মনে করে নিশীথ সেনকে বিয়ে করেছিল এক দিন এই স্ত্রীলোকটি— হারীতের জন্ম দিয়েছিল ? 'না, অর্চনা বললে, "নিশীথবাবুকে জানাবার মত আশ্চর্য কিছু ঘটে নি তো । কোনো দরকার নেই তাকে জানাবার । “আশ্চর্য জিনিস ছাড়া তিনি অণর-কিছু জানতে চান না ?’ *ৰ্তার ছেলের শরীর সারিয়ে দেব, তার ছেলেকে বলে কয়ে এক-অtধ বছর জলপাইহাটিতে রেখে দেব, এ শুনে খুশি হবেন তিনি । কোনো সংবাদ দিয়ে তিনি তো আমাকে খুশি করেন নি, কেন খুশি করতে যাব তাকে আমি । নাঃ, এ নিয়ে তাকে চিঠি লিখব না আমি, অৰ্চন বললে, এ রকম ব্যাপার নিয়ে নিশীথবাবুকে চিঠি লিখে র্তার কাছে নিজেকে সুমনাদির মত ভাল মানুষ বানিয়ে তুলে কোনো লাভ নেই। হারীত টের পেল অৰ্চনার সঙ্গে যে-স্থির সম্বন্ধ ঠিক করেছে সে, সেটাকে অৰ্চনা 8 بهoه