পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কই জানি না তো ।” ‘রানুর কোনো খবর পেলে ? "ן וה' ঘাস খেতে-খেতে হঠাৎ চুনাপাথরের মত রঙের এক-একটা গাভী যেমন নাড়ীর টানে চোখ তুলে, মুখ তুলে, দাড়ায়, খুঁটোয় টান পড়ে, গলায় টান পড়ে দড়িটা একেবারে টান-টান হয়ে গেছে বলে, অচিত তেমনি কেমন একটা নিস্তব্ধ অব্যক্তভাবে দু-এক মুহূর্ত দাড়িয়ে রইল । গলার দড়িতে টান পড়েছে প্রায়—খুঁটোটা মাটির ভিতরে অনেক দূর ডোবানো, খুব শক্ত ; মূহূর্তের মধ্যেই এই বিদঘুটে অস্বস্তির ভাবটা ঢিলে হয়ে গেল—নিজের সহজ সত্তায় ফিরে এসে অৰ্চিতা বললে, 'আশ্চর্য—একেই বলে হাওয়া হয়ে যাওয়া । তুমি, আমি, কাকের ডানা, ঘাসের শিস কেউ কিছু জানল না, পুলিশে কোনো কিনার করতে পারল না । জলপাইহাট থেকে বেরুবার সুটো তো পথ—একটা স্টিমার লাইনে, একটা ট্রেন লাইনে । উনি বলেছেন এ দুটো দিয়ে স্টেশনের কোনো লোকই রানুকে বেরিয়ে যেতে দেখে নি । রণনু স্টেশন দিয়ে যদি যায় সে তো দেখার জিনিস ; নদীর শুশুকগুলো অদি রূপবুপুর করে চোখ পালটে দেখে যায় । কিন্তু কেউ দেখল না—’ ‘কে জানে গেছে কিনা। গেলে কি আর স্টেশন দিয়ে যাবে। নদীতে ডুবে গেলে কে খেণজ পাবে তার—’ ‘উঠবে তো গিয়ে কোথাও দেহটা ৷” ‘কে জানে ? ‘আমি অবিশ্যি একটা কথা শুনেছি, কাউকে বলবে না বলে ।” ‘কার ? রানুর কথা ? কী শুনেছ ? ‘এদিকে এসো—এই করমচা গাছগুলোর জঙ্গলের ভিতর—ঐ দেয়ালটার পিছনে, নিরিবিলি কথা বলবার জায়গা, কেউ দেখবে না।’ সামনে কুপসি তেপান্তর—নিশীথ নিম্পূহ মুখে রোদের বেলার দিকে তাকিয়ে বলল, “না গো, কী বলবে এখানেই দাড়িয়ে বলে |’ ‘ওখানে কি কাটা ফুটবে । না গোখরো আছে ? "এখানেই দাড়িয়ে বলো—’ ‘আমার কথা তুমি শুনবে না ? কাল তো কলকাতায় যাচ্ছ চলে । སྐ Q8