পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণচন্দ্র
জীবনী-কোষ
১৬০

কতকগুলি লোক সংগ্রহ করিয়া কাছাড় অধিকার করিবার চেষ্টা করিয়া ছিলেন। তিনি প্রথমে রাজধানী কশপুর অবরোধ করিলে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র গোয়াবাড়ী নামক স্থানে পলায়ন করেন। ইহাতেই বিজয়োন্মত্ত মুঘল সৈন্য বদরপুরস্থিত ইংরেজ ঘাটি আক্রমণ করেন। ইংরেজ সুবাদার কল্যাণ সিংহ তাঁহাকে পরাস্ত করিয়া বন্দী করেন। কাছাড়পতি কৃষ্ণচন্দ্র স্বীয় রাজধানীতে প্রত্যাবর্ত্তন করে। ১৮০৯ খ্রীঃ অব্দে মণিপুরাধিপতি মধুচন্দ্র স্বীয় ভ্রাতা চৌরজিৎ ও মারজিৎ কর্ত্তৃক রাজ্য হইতে বিতাড়িত হইয়া, কাছাড়পতি কৃষ্ণচন্দ্রের আশ্রয় গ্রহণ করেন। কৃষ্ণচন্দ্র নিজ সৈন্য দ্বারা তাঁহাকে সাহায্য করিয়াছিলেন। কিন্তু মধুচন্দ্র সমরক্ষেত্রে শয়ন করেন। ইহার কিছুকাল পরে মারজিৎও তাঁহার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। ১৮২৩ খ্রীঃ অব্দে অনপত্য কৃষ্ণচন্দ্র চল্লিশ বৎসর রাজত্ব করিয়া পরলোক গমন করিলে তাঁহার ভ্রাতা গোবিন্দচন্দ্র রাজা হইয়াছিলেন।

কৃষ্ণচন্দ্র চক্রবর্ত্তী—তিনি বীরভূমের রাজা বিপ্রচরণের কনিষ্ঠ পুত্র। ১৮৫৭ খ্রীঃ অব্দে পিতার মৃত্যুর পরে বিষয়ের অধিকারী হন। তিনি অতি সদাশয় ও পরোপকারী ছিলেন। পিতৃশ্রাদ্ধে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করিয়াছিলেন। তাঁহার কর্ম্মচারী নন্দগোপাল

বন্দ্যোপাধ্যায় ষাট হাজার ও তাঁরা চাদ মুখোপাধ্যায় সাতাশ হাজারটাকা তাঁহার নিকট ঋণী ছিলেন। এই শ্রাদ্ধ উপলক্ষে সেইসমস্ত টাকা তাঁহাদিগকে মাপ করিয়া দেন। তিনি স্বীয় রাজ্যে দেবালয় প্রতিষ্ঠা, জলাশয় খননাদি দ্বারা দেশের লোকের যথেষ্ট উপকার করিয়াছিলেন। ১৮৬১ খ্রীঃ অব্দের অক্টোবর মাসে মাত্র পঁয়ত্রিশ বৎসর বয়সে তিনি পরলোক গমন করেন। তাঁহার মৃত্যুর পরে তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্র রামরঞ্জন চক্রবর্ত্তী রাজা হন।

কৃষ্ণচন্দ্র তর্কালঙ্কার—ত্রিপুরাজিলার চাপিতলা গ্রামের ভট্টাচার্য্য বংশে বহু পণ্ডিত জন্মগ্রহণ করিয়াছেন। কৃষ্ণচন্দ্র তাঁহাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁহার পিতার নাম রুক্মিণীকান্ত বিদ্যালঙ্কার। তাঁহার পুত্র কালিদাস সিদ্ধান্ত পঞ্চানন। তাঁহারা সকলেই প্রসিদ্ধ নৈয়ায়িক পণ্ডিত ছিলেন।

কৃষ্ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়—তিনি ১৮৫০ খ্রীঃ অব্দে নদীয়া জিলার অন্তর্গত শিবনিবাস গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কিছুদিন কলিকাতা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়ন করিয়াছিলেন। শারীরিক অসুস্থতা নিবন্ধন পাঠ পরিত্যাগ করেন। তিনি প্রথমে অক্ষয়চন্দ্র সরকার সম্পাদিত সাধারণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের পদ গ্রহণ করেন। তাহার পরে তিনি বঙ্গবাসী পত্রিকার সম্পাদক