পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কণাদ
জীবনী কোষ

মান্দ্রাজ প্রদেশে শাসন বিভাগে কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন, তখন কুম্ভকোনম নগরীতে তাঁহার জন্ম হয়। এ দেশে যে সকল ইংরেজ রাজকর্ম্মচারী কর্ম্মকুশতার জন্য খ্যাতি অর্জ্জন করিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে সার হেনরী বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেন। অধিকন্তু এদেশবাসীদের দুঃখ দারিদ্র্যের জন্য তিনি তাহদের প্রতি আন্তরিক সহানুভূতিশীল ছিলেন বলিয়া স্ব-জাতীয় অন্যান্য কর্ম্মচারীদের নিকট তাদৃশ প্রিয় হইতে পারেন নাই। কিন্তু উপর ওয়ালাদের বিরক্তির ভয়েও তিনি কখন বিবেকানুমোদিত কাজ করিতে বা কথা বলিতে পশ্চাৎপদ হন নাই। আসামের চা-বাগানের নির্য্যাতিত কুলীদিগের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করাতে এবং তাহাদিগকে অন্যায় অত্যাচারের হাত হইতে রক্ষা করিবার চেষ্টা করাতে, তিনি আসামের স্বজাতীয় চা-কর সাহেব এবং অন্যান্য পদস্থ রাজপুরুষদের বিশেষ বিরাগ ভাজন হন। তৎফলে, যোগ্যতা সত্ত্বেও তিনি উচ্চতর পদলাভ করিতে পারেন নাই। আসামের চিফ-কমিশনার রূপেই তাঁহাকে কর্ম্ম হইতে অবসর গ্রহণ করিতে হয়। ১৯১৫ খ্রীঃ অব্দে ইংলণ্ডে এই মহানুভব পুরুষের মৃত্যু হয়।

কণাদ— (১) বৈশেষিক দর্শনকার কণাদ ঋষি খ্রীঃ পূঃ ১২শ শতাব্দীতে
বর্ত্তমান ছিলেন। তিনি তণ্ডুলকণা ভক্ষণ করিতেন বলিয়া তাঁহার নাম কণাদ হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। তাঁহার প্রকৃত নাম উলুক বলিয়। তাঁহার প্রণীত দর্শন ‘ঔলুক্যদর্শন’ নামে খ্যাত। তিনি প্রভাসক্ষেত্রে বাস করিতেন এবং তাঁহার গুরুর নাম সোমশর্ম্মা ছিল। কনাদের মতে ভাব-পদার্থ—দ্রব্য, গুণ, কর্ম্ম, সামান্য, বিশেষ ও সমবায়—এই ছয়টী। তাঁহার মতে এই ষট্‌-পদার্থ সম্বন্ধে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করিতে পরিলেই মুক্তি লাভ হয়। কণাদ পরমাণু-বাদী ছিলেন। তাঁহার মতে—অদৃষ্ট কারণ বিশেষ দ্বারা পরমাণুর সংযোগ বিয়োগের দ্বারাই জগতের উৎপত্তি। তেজঃ ও আলো একই মূল পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা মাত্র। ইহা তিনিই প্রথম আবিস্কার করেন। বর্ত্তমান সময়ে ইউরোপে পরমাণুবাদ সর্ব্বত্র গৃহীত। এই পরমাণুবাদ আমাদের দেশেই সর্ব্ব প্রথমে আবিষ্কৃত হইয়াছে। মহর্ষি কণাদই ইহার আবিষ্কর্ত্তা। মহর্ষি কণাদের জড়পদার্থের জ্ঞান সম্বন্ধে সমধিক দৃষ্টি ছিল। সেই জন্যই তিনি পরমাণুবাদ স্থাপন করেন। মেঘ, বিদ্যুৎ, বজ্রাঘাত, ভূমিকম্প, করকা, হিমশীলা, বৃক্ষের রস সঞ্চার, চুম্বক ও চুম্বকার্ষণ, গতি, জড়ের সংযোগ ও বিয়োগাদি গুণ ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ে