পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয়কৃষ্ণ জাবনী-কোষ >○○し* উপর নানারূপ অত্যাচার হইতে থাকে। তাহার অগ্রজ ব্ৰজগোপাল গোস্বামী মহাশয় সমাজপতিদের উত্তেজনার প্রকাগু সভা করিয়া তাহীকে পরিত্যাগ করিলেন । তাহার এই কাজে দেশের লোক র্তাহার উপর এরূপ খড়গহস্ত হইয়াছিল যে, পথে বাহির হইলে কেহ কেহ তাঁহাকে গালি দিত, কেহ ধূলি বা প্রস্তর নিক্ষেপ করিত কেহ বা পাগল মনে করিয়া গায়ে খুখু দিত । তাঁহার জননী র্তাহার এই কাজে মৰ্ম্মাহত হইয়া পুনরায় উপবীত ধারণের জন্য অনুনয় করিয়া ক্রনন করিতেন । একদিন জননীর শোকাকুল ক্রনন সহ করিতে না পারিয়া তিনি মূচ্ছিত হইয়া পড়িলেন । পরে মাতাকে বলিলেন “যদি আমাকে পুনৰ্ব্বার উপবীত ধারণ করিতে হয় তবে নিশ্চয়ই আমার মৃত্যু হইবে । আমি আর এই অসত্য ধারণ করিতে পারিব না ।” তখন র্ত হার জননী আর র্তাহাকে পুনরায় উপবীত গ্রহণ করিবার জন্ত অনুরোধ করিলেন না। তখনকার দিনে উপবীত পরিত্যাগ ব্রাহ্মগণেরও অবগু করণীয় ছিল না । অনেক দেশে বিখ্যাত ব্রাহ্মও তখন উপবীত ধারণ করিয়া থাকিতেন । এরূপ অনেক লোক ও র্তfহার কার্যের অমুমোদন করিলেন না । এইরূপে একাধারে ব্রাহ্ম ও প্রাচীন পন্থী, সকলেরই নিন্দ, তিরস্কার, গালি ও অত্যাচার তাহার উপর বর্ষিত হইতে লাগিল । কিন্তু তিনি অসাধারণ সহিষ্ণুতার সঙ্গিত এই সকল অত্যাচার সহ করিতে লাগিলেন । “আমি সত্য হইতে ভ্ৰষ্ট হই নাই ; এই সত্য জয়যুক্ত হইবেই” এই দৃঢ় ও গভীর বিশ্বাসই তাহাকে সকল প্রকার অত্যাচার সহ করিতে বল প্রদান করিয়াছিল। মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের শেষ বর্ষে কলেজের কর্তৃপক্ষের সহিত বাঙ্গাল বিভাগের ছাত্রদের বিবাদ উপস্থিত হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনও অন্যায় আচরণে তিনি ও আরও কয়েক জন ছাত্র কলেজ পরিত্যাগ করেন । পরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মধ্যস্থতায় পুনরায় সদ্ভাব স্থাপিত হইলে অধিকাংশ ছাত্রই কলেজে ফিরিয়া গেলেন । গোস্বামী মহাশয় আর ফিরিলেন না । তিনি ব্রাহ্ম সমাজের কার্য্যেই বিশেষভাবে নিজেকে নিযুক্ত করিলেন । এই সময় হইতে প্রায় পচিশ বৎসর কাল তিনি অসাধারণ উৎসাহ ও গভীর নিষ্ঠার সহিত দেশ বিদেশে ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করিয়৷ বেড়াইয়।ছিলেন । ১২৭৯ বঙ্গাব্দে তিনি প্রথম ব্রাহ্ম সমাজের আচার্য্যের পদে বৃত হন। প্রধানতঃ পূৰ্ব্ব ও উত্তর বঙ্গেই তিনি প্রচারোদেশে পর্য্যটন করেন । ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল, চট্টগ্রাম, বরিশাল