পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতাপ সিংহ যত্নবান থাকিতেন। ইহার উৎসাহে উত্তেজিত হইয়া রাজপুত যোদ্ধবর্গ স্বদেশ ও স্বাধীনতা রক্ষার্থ বরীমদে মত্ত হইয়া উঠিল । ইনি দ্বাবিংশতি সহস্র রাজপুত সৈন্য সংগ্রহ পূৰ্ব্বক অসীম মোগল সেনার আগমন প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন । প্রতাপের বিরুদ্ধে আকবর স্বয়ং উপস্থিত হইতে পারিলেন না। কিন্তু র্তাহার প্রধান সেনাপতি মানসিংহ এবং জ্যেষ্ঠপুত্র সেলিম বহু সৈন্যসহ ইহঁাকে দমন করিতে স্বাত্রা করিলেন। ১৫৭৬ খৃষ্টাব্দে হলদিঘাটে উভয় সৈন্যে সাক্ষাৎ হইল। যুদ্ধে প্রতাপ অসীম বীৰ্য্য প্রদর্শন পূর্বক শক্রপক্ষ আক্রমণ করিলেন। রণমদে মত্ত হইয় ইনি শক্রব্যুহ ভেদ করিয়া মানসিংহের অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইলেন। তিনি তখন দূরে সৈন্য বিন্যস্ত কার্য্যে লিপ্ত ছিলেন । র্তাহার সাক্ষাৎ না পাইয়া প্রতাপ নিকটস্থ সেলিমের দিকে ধাবিত হইলেন । তাহার রক্ষকসকল একে একে ইহার অব্যর্থ আঘাতে নিপতিত হইল । প্রতাপের বিখ্যাত অশ্ববর চৈতক সন্মুখের পদদ্বয় সেলিমের হস্তীর গাত্রে সংলগ্ন করিয়া দণ্ডায়মান হইল। বারবর দারুণ বর্ষা সেলিমের উপর নিক্ষেপ করিলেন । লৌহের [ ১৬৪ ] প্রতাপ সিংহ হাওদা সেলিমকে রক্ষা করিল, কিন্তু মাহুত শমন সদনে প্রেরিত হইল । হস্তী সেলিমকে লইয়। পলায়ন করিল । প্রতাপ অপরিহার্য্য বিক্রমে শক্রসেনা আক্রমণ করিলেন। শরীরের সপ্তস্থানে আহত হইয়াও বীরবর সে সকল তুচ্ছ করিয়া, অসুর বলে অস্ত্র সঞ্চালন পূর্বক প্রতি আঘাতে শক্রপক্ষ ংস করিতে লাগিলেন । রাজপুত বীরগণ রাণার বীরত্বে উত্তেজিত হইয়া তাহার অনুকরণ করিতে লাগিলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হইল না। অগণ্য যবন সেনা ক্ষয় করা অসাধ্য হইল। পরিশেষে দ্বাবিংশ সহস্র রাজপুতের মধ্যে অষ্ট সহস্ৰ লইয়া প্রতাপ যুদ্ধস্থল ত্যাগ করিলেন । হলদিঘাটের যুদ্ধ প্রতাপের অসীম বীরত্বের অক্ষয় কীৰ্ত্তি চিরকাল ঘোযণা করিবে । অতঃপর মোগল সৈন্য রাজধানী এবং দুর্গ সকল ক্রমে অধিকার করিলে, পরিবার বর্গ লইয়া প্রতাপ অরণ্যে অরণ্যে বিচরণ করিয়া প্রাণ রক্ষা করিতে লাগিলেন। প্রভুভক্ত ও স্বাধীনতাপ্রিয় রাজপুতগণ ইহঁার সঙ্গী হইলেন। সুবিধা পাইলেই অলক্ষিত ভাবে ইমি সদলবলে শক্রসেনার উপর পতিত হইয়া তাহাদিগকে বিনাশ করিতেন । কিন্তু অনেক সময় ইহঁাকে স্বীয় ও পরিবারবর্গের