পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতন্য পূৰ্ব্বক গঙ্গার মাহাত্ম্য বর্ণন করুন, আমরা শুনিয়া সুখী হই’ । পণ্ডিত তৎক্ষণাৎ শ্লোক রচনা পূৰ্ব্বক পাঠ করিলেন। দোষাদোষ প্রদর্শন করিতে আদিষ্ট হইয়া, ইনি শ্লোক সকলের অর্থ ও অলঙ্কার দোষ দেখাইলে, পণ্ডিত পরাস্ত হইয়া ইহঁাকে সরস্বতীর বরপুত্র বলিয়া প্রস্থান করিলেন । চৈতন্ত্য অতি উদার প্রকৃতির লোক ছিলেন। একদা ইনি অপর একটা পণ্ডিতের সহিত নৌকায় গঙ্গা পার হইতে ছিলেন । পণ্ডিত ইহার হস্তে দ্যায়ের টীকা দেখিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিলেন। ইনি র্তাহার দুঃখের কারণ অবগত হইলেন যে তিনিও একখানি টীকা লিথিয়াছেন ; কিন্তু নিমাই পণ্ডিতের টীকা থাকিতে লোকে আপরের টীকা পড়িবে না । পণ্ডিতের দুঃখের কারণ শুনিয়া চৈতন্ত নিজের টীক। তৎক্ষণাৎ গঙ্গায় নিক্ষেপ করিলেন । চৈতন্য এই সময়ে গয়াক্ষেত্রে পিতৃক্রিয়ার্থ উপস্থিত হইলেন । তথায় বিষ্ণুপদমন্দিরে প্রবেশ করিয় ব্ৰাহ্মণগণের স্তব, স্তুতি, পূজা, বন্দন প্রভৃতি দর্শন ও শ্রবণে ইহার হৃদয়ে ভক্তির উচ্ছাস প্রবাহিত হইল। এই স্থানে ঈশ্বরপুরী নামে একজন বৈষ্ণবব্রহ্মচারীর সহিত ইহার واN [ bు ] সাক্ষাৎ হয়। সাধুর সহ আলাপে ইহঁর ভক্তিবেগ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল । পরে ব্রহ্মচারীর নিকট ইনি বৈষ্ণব ধৰ্ম্মে দীক্ষিত হইলেন । ভক্তিরসে মগ্ন হওয়ায় এখন হইতে ইহার কেবল হরিনাম জপ, হরিধ্যান, হরিজ্ঞান সার হইল। " নবজীবন লাভ করিয়া চৈতন্ত্য নবদ্বীপে প্রত্যাগমন করিলেন । হরিধ্যান ভিন্ন এখন আর ইহঁীর মনে অন্য কিছুর উদয় হইত না । ভক্তি প্রেমে একেবারে মগ্ন হইয়া পড়িলেন । সংসারের কাজ কৰ্ম্মে আর লিপ্ত হইতে পারিতেন না । অধ্যাপনা কাৰ্য্য বন্ধ করিতে, বাধ্য হইলেন ; কেন না ছাত্রদিগকে পড়াইবার সময় হরিনাম ভিন্ন অর কিছু ইহঁার মুখে আসিত না । সৰ্ব্বকৰ্ম্মত্যাগ করিয়া কেবল ধৰ্ম্মজীবন যাপন করিতে লাগিলেন । নবদ্বীপের বৈষ্ণববৃন্দ চৈতন্যকে প্রাপ্ত হইয়া অপার আনন্দে মগ্ন হইলেন । নিত্যানন্দ প্রভৃতি বৈষ্ণবগণ ইহার ভক্তি ও প্রেমে মুগ্ধ হইয়া ইহার সহিত মিলিত হইলেন । নবদ্বীপে হরিনামের তুমূল তরঙ্গ উত্থিত হইল। নানাস্থান হইতে ভক্তগণ ইহঁদের সহিত মিলিত হইতে লাগিলেন। যবন হরিদাস হরিনামরসে আর্দ্র হইয়া অনেক কষ্ট ও নির্যাতন সহ করিয়াও হরিনাম ত্যাগ না করিয়া